শুক্রবার বিহারের মহাত্মা গান্ধী সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির সহ শিক্ষককে মারধরের অপরাধে ১২ জনকে গ্রেফতার করল মতিহারি জেলার পুলিশ। বৃহস্পতিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুর পর তাঁর সম্পর্কে সমালোচনামূলক একটি ফেসবুক পোস্ট দেন ওই শিক্ষক। তারপরেই তৈরি হয় উত্তেজনা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী প্রফেসরের পদে ছিলেন সঞ্জয় কুমার। তাঁর সহকর্মী জানান, মারধরের ফলে আভ্যন্তরীণ আঘাত পান সঞ্জয়। বারবারই অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন তিনি। চিকিৎসার জন্য তাঁকে পাটনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজপেয়ীকে শ্রদ্ধা জানাতে এসে হেনস্থার শিকার স্বামী অগ্নিবেশ
পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন সঞ্জয় কুমার। তিনি জানিয়েছেন, এদিন আজাদ নগরের মতিহারি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ঘরেই বসেছিলেন তিনি, হঠাৎই রাহুল পান্ডে এবং আমান বিহারী পান্ডে নামে দুই ব্যক্তি সহ প্রায় ২০-২৫ জন তাঁর ঘরে ঢুকে তাঁকে মারধরের চেষ্টা করে। অধ্যক্ষ আরও জানিয়েছেন, হামলার সময় অভিযুক্তরা তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন কেন তিনি মতিহারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং অন্যান্যদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। পাশপাশি ফেসবুকে এদিনের ঘটনার একটি ভিডিওতে দেখা গিয়েছে এক ব্য়ক্তি ওই শিক্ষককে জিজ্ঞাসা করছেন তিনি “কানহাইয়া কুমার হতে চান কিনা”। শুধু তাই নয়, পেট্রোল ঢেলে সঞ্জয় কুমারকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগও উঠেছে ওই ১২ জনের বিরুদ্ধে।
তাঁর অভিযোগে সঞ্জয় জানিয়েছেন, ফেসবুকে তাঁর পোস্ট করার পরেই তাঁকে আক্রমণ করা হয়। তিনি এও দাবি করেছেন যে দৈনিক ভাস্করের স্থানীয় ব্যুরো প্রধান সঞ্জয় কুমার সিং তাঁর ফেসবুক পোস্টের ভিত্তিতে তাঁকে “আতঙ্কবাদী” আখ্যা দিয়েছেন।
রাহুল কুমার পাণ্ডে, সানি বাজপেয়ী, অমন বিহারী বাজপেয়ী, পুরুষোত্তম মিশ্র, রবিকেশ মিশ্র, জ্ঞানেশ্বর গৌতম, দৈনিক ভাস্করের সঞ্জয় কুমার সিং, ডঃ পবনেশ কুমার সিং, দিবাকর সিং, দিনেশ ব্যাস, জিতেন্দ্র গিরি ও রাকেশ পান্ডে, এই ১২ জন অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের বিরুদ্ধে আইপিসি বিভাগের ৩২৩, ৩২৫, ৩৪১, ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ৩৬৫, ৪৪৮, ৫০৬ এবং ১২০ ধারায় মামলা দায়ের হয়েছে।
সূত্রের খবর, উপাচার্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বাকি কর্মীদের মধ্যে দীর্ঘদিনের একটি দ্বন্দ্ব রয়েছে। এবং তার জেরেই এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে। সঞ্জয়ের এক সহকর্মী জানান, বাজপেয়ীকে নিয়ে লেখা পোস্টটি হয়ত এই হামলার তাৎক্ষণিক অজুহাত হিসেবে কাজ করেছে।