ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) শনিবার অমৃতসর এবং চণ্ডীগড়ে নিষিদ্ধ খালিস্তানপন্থী শিখ সংগঠন শিখস ফর জাস্টিস সংগঠনের আমেরিকা প্রবাসী প্রতিষ্ঠাতা ও আইনজীবী গুরপতবন্ত সিং পান্নুর জমি এবং বাড়ির অংশ বাজেয়াপ্ত করেছে। পান্নু, একজন খালিস্তানি বিচ্ছিন্নতাবাদী। তিনি ২০১৯ থেকে এনআইএর রাডারে রয়েছেন। ২০২০ সালের ১ জুলাই কেন্দ্রীয় সরকার পান্নুকে জঙ্গি তকমা দিয়েছিল। তার আগের বছর, ২০১৯ সালের ১০ জুলাই, শিখস ফর জাস্টিস বা এসএফজে সংগঠনকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছিল। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে, বিশেষ এনআইএ আদালত পান্নুর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল। গত নভেম্বরে পান্নুকে অপরাধী ঘোষণা করেছে এনআইএ আদালত।
সম্প্রতি, পান্নু খোলা মঞ্চে ভারতীয় প্রবীণ কূটনীতিক এবং সরকারি আধিকারিকদের খোলাখুলি হুমকি দিয়েছেন। এমনটাই জানা গিয়েছে এনআইএর এক বিবৃতিতে। যাতে বলা হয়েছে, পান্নু কিছু দিন আগে কানাডিয়ান হিন্দুদেরও হুমকি দিয়েছিলেন। তাঁদের কানাডা ছেড়ে চলে যেতে বলেছিলেন। একইসঙ্গে দাবি করেছিলেন যে কানাডার হিন্দুরা ভারতের পাশে থাকার মাধ্যমে একটি 'জাতিবাদী দৃষ্টিভঙ্গি' গ্রহণ করেছে।
তদন্তে জানা যায় যে শিখস ফর জাস্টিস সাইবার স্পেসের অপব্যবহার করেছে। নির্দোষ যুবকদের মৌলবাদী করতে এবং তাদের সন্ত্রাসী অপরাধ ও কার্যকলাপে উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে। এই সংগঠনের মাথায় রয়েছে পান্নু। এনআইএ জানিয়েছে, 'পান্নু, ভারতের সার্বভৌমত্ব, অখণ্ডতা এবং নিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ করে স্বাধীন খালিস্তান রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য লড়াই করতে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পঞ্জাব-ভিত্তিক গ্যাংস্টার এবং যুবকদের আহ্বান জানিয়েছেন।'
এনআইএ-এর মতে, শনিবার বাজেয়াপ্ত করা পান্নুর সম্পত্তিগুলোর মধ্যে রয়েছে অমৃতসরের খানকোট গ্রামে একটি ৪৬-কানাল (৫.৭ একর) কৃষিজমি এবং চণ্ডীগড়ের সেক্টর ১৫/সি এলাকায় একটি বাড়ির এক-চতুর্থাংশ। এই সম্পত্তিগুলো এর আগে দুটি ভিন্ন মামলায় আদালতের নির্দেশের পরে সংযুক্ত করেছিল এনআইএ। সেই সব সম্পত্তিই এবার বেআইনি কার্যকলাপ (প্রতিরোধ) আইনের (ইউএপিএ) প্রাসঙ্গিক ধারায় (২০২০ সালের ৫ এপ্রিল, নথিভুক্ত মামলায়) বিশেষ আদালতের নির্দেশে এনআইএ বাজেয়াপ্ত করল।
পাশাপাশি, কানাডায় নিহত খালিস্তানি জঙ্গি নেতা হরদীপ সিং নিজ্জরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য একটি নোটিস জারি করেছে এনআইএ। চলতি বছরের জুন মাসে কানাডায় নিজ্জরের হত্যা ভারত এবং কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের সূত্রপাত করেছে। যদিও নিজ্জরের পরিবার, মূলত জলন্ধরের ভার সিংপুরা (ফিল্লাউর) গ্রামের বাসিন্দা। কিন্তু, তারা কানাডায় বসতি স্থাপন করেছে। তবে, এখনও পঞ্জাবের গ্রামে নিজ্জরের একটি বাড়ি এবং জমি আছে।
আরও পড়ুন- কানাডায় বসেই ভারতে বিশাল নাশকতার ছক, পাকিস্তানে গিয়ে কার সঙ্গে সাক্ষাৎ নিজ্জরের?
সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার নোটিস, নিজরের তালাবদ্ধ বাড়ির বাইরে সাঁটানো হয়েছে। সবটাই করা হয়েছে, মোহালির বিশেষ সিবিআই আদালতের নির্দেশে। আদালত নিজ্জরের পরিবারের সদস্যদের বা প্রতিনিধিদের নির্দেশ দিয়েছে, 'আবেদনের বিষয়ে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য। এর আগে, হরদীপ সিং নিজ্জরের স্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার জন্য গত ১১ সেপ্টেম্বর এনআইএ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল।'