কেন্দ্রের হেফাজত থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে আস্ত ইতিহাস। এক-দুই নয়, দেশের ৫০টি মনুমেন্ট বা স্মৃতিসৌধের হদিশ পাওয়া যাচ্ছে না। কোথাও ছিল সেই মনুমেন্টগুলো তা-ই বুঝতে পারছেন না পুরাতত্ত্ববিদরা। দেশে ৩,৬৯৩টি স্মৃতিসৌধ থাকার কথা। কেন্দ্রীয় নথিতেও তাই আছে। এই সব স্মৃতিস্তম্ভগুলো দেখভালের দায়িত্বে আছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা পুরাতত্ত্ব বিভাগ। যা কেন্দ্রীয় সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন। সেই সংস্থার নিরাপত্তায় থাকা ৫০টি স্মৃতিসৌধেরই খোঁজ মিলছে না। আর, একথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে খোদ সংস্কৃতি মন্ত্রক। সংসদে মন্ত্রক এই সত্যিটা স্বীকার করে নিয়েছে।
গত ৮ ডিসেম্বর সংস্কৃতি মন্ত্রক এই ব্যাপারে তাদের রিপোর্ট সংসদে জমা দিয়েছে। রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে সংসদের পরিবহণ, পর্যটন, সংস্কৃতি মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির কাছে। এই রিপোর্ট বা প্রতিবেদনের নাম দেওয়া হয়েছে, 'ভারতে নিখোঁজ স্মৃতিস্তম্ভ এবং স্মৃতিস্তম্ভের সুরক্ষা সম্পর্কিত সমস্যা'। এই রিপোর্টে সংস্কৃতি সচিব গোবিন্দ মোহন, এএসআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল ভি বিদ্যাবতী ও এএসআইয়ের প্রবীণ আধিকারিকদের বক্তব্যের উল্লেখ আছে।
২০২২ সালের ১৮ মে-এর আগে ওই আধিকারিকরা তাঁদের বক্তব্য জানিয়েছেন। রিপোর্টে তাঁরা লিখেছেন, '…এটা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয় যে সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীনস্ত ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের অধীনে থাকা বেশ কয়েকটি স্মৃতিসৌধকে দ্রুত নগরায়নের কারণে, জলাধার এবং বাঁধের জলে ডুবে যাওয়ার জন্য এবং দুর্গম অবস্থানের কারণে চিহ্নিত করা যায়নি।'
নিখোঁজ স্মৃতিসৌধগুলোর মধ্যে ১১টি উত্তরপ্রদেশের। পাশাপাশি দিল্লি এবং হরিয়ানায় দুটি স্মৃতিসৌধ। এছাড়া আসাম, পশ্চিমবঙ্গ, অরুণাচল প্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডের স্মৃতিসৌধও আছে। আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) বক্তব্য অনুযায়ী, এই সব স্মৃতিসৌধের মধ্যে ১৪টি দ্রুত নগরায়নের জন্য হারিয়ে গেছে। ১২টি জলাধার বা বাঁধের জলে ডুবে গিয়েছে। আর, বাকি ২৪টিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
আরও পড়ুন- চিনের করোনার কী অবস্থা? জানুয়ারিতে ভারতেও ছড়াতে পারে? কী বলছেন বিজ্ঞানীরা?
এই ব্যাপারে এএসআইয়ের কর্তারা সানডে এক্সপ্রেসকে বলেছেন, 'এই ধরনের অনেক ক্ষেত্রেই শিলালিপি বা স্মৃতিসৌধের নির্দিষ্ট কোনও ঠিকানা নেই। সেগুলো স্থানান্তরিত বা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সেগুলোকে চিহ্নিত করাও কঠিন।' এএসআই আরও জানিয়েছে, কেন্দ্রীয়ভাবে সুরক্ষিত স্মৃতিস্তম্ভগুলোর একটি বড় অংশকে ১৯৩০, ১৯৪০ এবং ১৯৫০-এর দশকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। স্বাধীনতার পরের দশকগুলোয় সেই সব স্মৃতি সৌধকে সংরক্ষণের বদলে নতুন স্মৃতিসৌধ আবিষ্কারের দিকে মনোনিবেশ করা হয়েছিল।
Read full story in English