ছাত্রীদের হস্টেলের ইফতারে উপাচার্য যোগ দেওয়ায়, প্রতিবাদ আছড়ে পড়ল বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে। কেন উপাচার্য ছাত্রীদের হস্টেলের ইফতারে যোগ দিলেন? এই প্রশ্নকে সামনে রেখে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেছেন পড়ুয়াদের একাংশ। বিক্ষোভকারীরা উপাচার্যের কুশপুতুল দাহ করেছেন। পালটা, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জবাব, ক্যাম্পাসে বহুবারই ইফতারের আয়োজন হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে উপাচার্যরা সেই ইফতারে যোগও দিয়েছেন। তাই বর্তমান উপাচার্যের ছাত্রী হস্টেলে আয়োজিত ইফতারে যোগ দেওয়া কোনও নতুন কিছু নয়।
উপাচার্যের ইফতারে যোগ দেওয়ার কথা জানাজানি হওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএইচইউ) চত্বরে। উপাচার্যের ইফতার-প্রীতীতে ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা তার কুশপুত্তলিকা দাহ করেন। বিক্ষোভকারীরা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের ছাত্র সংগঠন অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের নেতা ও কর্মী। তাঁরা অভিযোগ করেন, বর্তমান উপাচার্য সুধীর কুমার জৈন বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইফতার অনুষ্ঠানে উপাচার্যের যোগদানের রীতি চালু করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসীর সাংসদ। তিনি এখানকার সাংসদ হওয়ার পর থেকেই বারাণসীজুড়ে শুরু হয়েছে সংঘ পরিবারের প্রভাব বিস্তারের কর্মসূচি। তার মধ্যে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন ধরেই সংঘের ছাত্র সংগঠন ক্ষমতায়। দেশে কোনও হিন্দু জাতীয়তাবাদী ইস্যু তৈরি হলেই তার আঁচ এসে পড়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে। চলে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ, আন্দোলন কর্মসূচি। ইফতার ইস্যুতে সংঘের বিরোধী অবস্থানেও তাই শরিক হতে দেরি করে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের এবিভিপি ইউনিট। সেই কারণেই উপাচার্যের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে প্রতিবাদ।
আরও পড়ুন- সীমানা বিবাদ সমাধানের পথ খুঁজছে কেন্দ্র, অসম শান্তি সভায় বললেন মোদী
বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের মুখপাত্র ড. রাজেশ সিং পালটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ড. রাজেশ সিং এই প্রসঙ্গে বলেন, 'উপাচার্য ক্যাম্পাসের ইফতারে অংশ নিলেন, এটা এখানে প্রথম ঘটল না। প্রতিবছরই ঘটে। করোনার কারণে এই রীতি পালন দু'বছর বন্ধ ছিল। আমাদের শিক্ষাপ্রাঙ্গণ অসাম্প্রদায়িক। আর, ইফতারে যোগদান মোটেও নতুন কিছু না। উপাচার্যের সঙ্গে ওই ইফতারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য পড়ুয়া এবং শিক্ষকরাও যোগ দিয়েছিলেন।' পাশাপাশি, অন্য এক টুইটে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, উপাচার্য আন্দোলনরত পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করেছেন।
যদিও এবিভিপির রাজ্য কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য অধোক্ষজ পাণ্ডে জানিয়েছেন, তাঁরা এই বিক্ষোভ সমর্থন করছেন। পাণ্ডে নিজে বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতিষ বিভাগের ছাত্র। এবিভিপির ওই নেতা পালটা প্রশ্ন তুলে বলেন, 'কেউ যদি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে নবরাত্রি পালন শুরু করেন, উপাচার্য কি তাতে অংশগ্রহণ করবেন?'
Read story in English