ওষুধের দোকান, ডেন্টাল ক্য়াম্প, ওয়াশিং মেশিন, লাইব্রেরি-কী নেই! কনকনে ঠান্ডার কাঁপুনি সহ্য় করে আন্দোলনে ঝড় তুলতে রীতিমতো কোমরবেঁধে বসেছেন কৃষকরা। বেশ কয়েকবার সরকারের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বরফ গলেনি। সরকারের লিখিত প্রস্তাবও পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন বিদ্রোহী কৃষকরা। এই পরিস্থিতিতে দেশের অন্নদাতাদের বিক্ষোভে সহজে যে যবনিকা পতন ঘটছে না তা তাঁদের বন্দোবস্ত দেখলেই টের পাওয়া যাবে।
সিংঘু সীমানায় বিক্ষোভরত কৃষকদের জন্য় ২টি ওয়াশিং মেশিন নিয়ে এসেছেন লুধিয়ানার বছর তিরিশের কৃষক প্রিন্স সাঁধু। তাঁর কথায়, ‘‘এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এখানে রয়েছি। খুব ঠান্ডা পড়েছে। এদিকে, আমাদের তেমন বেশি পোশাক নেই। দেখলাম, অনেক বয়স্ক লোকেরা ফুটপাথে জামাকাপড় পরিষ্কার করছেন। তারপরই বাড়ি গিয়ে দুটো ওয়াশিং মেশিন আনি। ওয়াশিং মেশিন গুলো ফুটপাথে রাখা হয়েছে, যাতে সকলে ব্য়বহার করতে পারেন। মেশিনে ড্রায়ারও রয়েছে। ফলে পোশাক শুকোনোর জন্য় কৃষকদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে না’’। দিনে ৫০০টিরও বেশি পোশাক পরিষ্কার করছেন প্রিন্স ও তাঁর বন্ধু আমনপ্রীত (২৭)।
আমনপ্রীত বললেন, ট্রলি ও ট্রাকে রাখা জেনারেটর ও ব্য়াটারির মাধ্য়মে ওয়াশিং মেশিন চালানো হচ্ছে। আরেক দল কৃষক নিজেদের ট্রাকে সোলার প্লেট লাগিয়েছেন। যাতে সকলে তাঁদের ফোন চার্জ দিতে পারেন। হরিয়ানার কারনালের গুরপিন্দর সিং (৪০) ২টি সোলার প্লেট এনেছেন।
আরও পড়ুন: প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিল্লিতে, ‘একইঞ্চিও নড়ব না’ দৃঢ়প্রত্যয়ী কৃষকরা
হরিয়ানার গুরুদ্বার থেকে আনা হয়েছে রুটি মেকার। যার সাহায্য়ে ঘণ্টায় হাজারেরও বেশি রুটি বানানো হচ্ছে। বিক্ষোভস্থলে রয়েছে ১০টিরও বেশি মেডিক্য়াল ক্য়াম্প ও মেডিক্য়াল স্টোর। একটা বাসের মধ্য়ে ডেন্টাল ক্য়াম্প রয়েছে। যেখানে এক্স-রে মেশিন ও অন্য়ান্য় মেডিক্য়াল সরঞ্জাম রয়েছে। মোহালির ডা. সানি অহলুয়ালিয়া ওই ক্য়াম্পটি চালাচ্ছেন।
কৃষকদের বিক্ষোভে পাঞ্জাব ও হরিয়ানার বেশ কয়েকজন পড়ুয়া শামিল হয়েছেন। তাঁদের মধ্য়ে যশবীর সিং নামে ২৯ বছরের যুবক ছোট লাইব্রেরি খুলেছেন। যেখানে ধর্ম, গল্প, ভারতীয় আইন সংক্রান্ত ৫০০-রও বেশি বই রাখা রয়েছে। রোজ প্রায় ৮০-৯০ জন ওই লাইব্রেরিতে আসেন।
সরকারের প্রস্তাবে অসন্তুষ্ট দিল্লি সীমানায় বিক্ষোভরত বেশ কয়েকজন কৃষক। আগামী ৬ মাস সেখানে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য় থাকার পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন