অনশন অবস্থান করার কথা ছিল ধর্মতলার ওয়াই চ্য়ানেলে। কিন্তু তা স্থানান্তরিত হয়ে গেল লালবাজারে কলকাতা পুলিশের প্রধান দফতরে। রাজ্যের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইন্সটিটিউট (পিটিটিআই) প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা অনশনের আগে মিছিল শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সেন্ট্রাল অ্যাভেনিউয়ের ফিরিঙ্গি কালিবাড়ি এলাকায়। সেখানেই পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের মধ্য়ে বেঁধে যায় ধুন্ধুমার। ঘটনাস্থলে হাজির হন বিজেপি নেতা তথা অধ্য়াপক অনুপম হাজরা এবং অভিনেতা জয় বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। যাদবপুর কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে তর্কাতর্কিও বেধে যায় ডিসি সেন্ট্রালের। কিছুক্ষণ পর আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অনুপমকেও প্রিজন ভ্য়ানে তুলে নিয়ে যায় পুলিশ।
আন্দোলনকারী সংগঠনের সভাপতি পিন্টু পাড়ুই বলেন, "পুলিশ আমাদের মিছিলে বাধা দিয়েছে। আমাদের ৯৭ জনকে আটক করেছে, লালবাজারে নিয়ে এসেছে। তাই ওয়াই চ্য়ানেলের পরিবর্তে এখানেই আমরা আমরণ অনশন আন্দোলন শুরু করেছি। আমাদের দাবি, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পিটিটিআই ছাত্রছাত্রীদের চাকরি ও প্রাথমিকে যোগ্য়তা অনুযায়ী পরিকাঠামো।"
এক আন্দোলনকারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: শশী ঘোষ
পিটিটিআই ছাত্রছাত্রীদের নিয়োগ ও প্রাথমিকে বেতন কাঠামো গঠনের দাবিতে আমরণ অনশনের ডাক দেয় ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেইন্ড টিচার্স অ্য়াসোসিয়েশন। ধর্মতলা চত্বরের ওয়াই চ্য়ানেলে সেই অনশন কর্মসূচি সফল করতে ফিরিঙ্গি কালিবাড়ি এলাকা থেকে মিছিল করার সিদ্ধান্ত নেন সংগঠনের সদস্যরা। পুলিশ প্রথম থেকেই মিছিলে বাধা দিতে থাকে। মিছিলের কোনও অনুমতি নেওয়া হয় নি বলেই পুলিশের দাবি। এদিকে আন্দোলনকারীরা পুলিশ ব্য়ারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। অনুপম হাজরা, সংগঠনের রাজ্য় সভাপতি পিন্টু পাড়ুই সহ বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারীকে পুলিশে সেখান থেকে আটক করে লালবাজার নিয়ে যায়। মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে লালবাজারেই অনশন শুরু করে দেন আন্দোলনকারীরা।
এই সংগঠনের দাবী, মুখ্য়মন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০০৫-০৬ সেশন থেকে বঞ্চিত পিটিটিআই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী নিয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে অন্যান্য রাজ্য়ের মত এরাজ্য়েও প্রাথমিক শিক্ষকদের ন্য়ূনতম যোগ্য়তা অনুযায়ী বেতন কাঠামো গঠন করতে হবে। এই সংগঠনের বক্তব্য়, বঞ্চিত পিটিটিআই ছাত্রছাত্রীদের নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মর্মে তিনি লিস্টও চেয়ে পাঠান। এবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি সেই তালিকা জমা দেওয়া হলেও বাস্তবে সে বিষয়ে কোনও অগ্রগতি হয়নি। তাই অনশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।