Advertisment

পুলওয়ামার জেরে জোরালো পদক্ষেপের কথা ভাবছে ভারত, দাবি ট্রাম্পের

মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও এবং রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা জন বোল্টন ইতিমধ্যে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন, যেমন দিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

পুলওয়ামার সন্ত্রাসবাদী হামলার প্রেক্ষিতে ভারত-পাকিস্তানের সম্পর্ক "অত্যম্ত বিপজ্জনক" হয়ে পড়েছে, বলেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এও বলেছেন যে ভারতের "কড়া জবাব" দেওয়ার ইচ্ছে তাঁর কাছে সম্পূর্ণ বোধগম্য। গত মঙ্গলবার ট্রাম্প জৈশ-এ-মহম্মদ দ্বারা সংঘটিত ওই হামলাকে "ভয়াবহ পরিস্থিতি" বলে বর্ণনা করেন, এবং জানান, আরও তথ্য পেলে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত বিবৃতি দেবেন।

Advertisment

মার্কিন সেক্রেটারি অফ স্টেট মাইক পম্পেও এবং রাষ্ট্রীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা জন বোল্টন ইতিমধ্যে পাকিস্তানের নাম উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছেন, যেমন দিয়েছে স্টেট ডিপার্টমেন্ট।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এক বিবৃতিতে পুলওয়ামা হামলাকে "অত্যন্ত কড়া ভাষায় ধিক্কার" জানায়, এবং জৈশের নাম করে তাদের ওপর এই "জঘন্য এবং কাপুরুষোচিত" আক্রমণের দায় চাপায়। নিজেদের পূর্বতন অবস্থান থেকে সরে এসে এই বিবৃতিতে স্বাক্ষর করে চিনও।

ভারত সরকার এখন পর্যন্ত ট্রাম্পের বিবৃতির কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও, শনিবার নয়া দিল্লিতে কিছু সরকারি সূত্র জানায়, ট্রাম্প চাইছেন, পাকিস্তানকে জৈশ-এ-মহম্মদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করতে।

সূত্রের আরও খবর, গত কয়েক দিনে যে জৈশ এবং জামাত-উদ-দাওয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চলেছে পাকিস্তান, সে সম্পর্কে ভারতকে আগাম জানিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এক সূত্রের কথায়, "আমেরিকার চাপে পড়েই এই পদক্ষেপ নেয় ইসলামাবাদ।"

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জেনেছে যে ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্সের সভাপতিত্বে থাকা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের প্রতিটি পদক্ষেপের ওপর অত্যন্ত কড়া নজর রাখছে, যে কারণে এখনও 'গ্রে লিস্ট' বা 'ধূসর তালিকা' থেকে বেরোতে পারে নি পাকিস্তান। আমেরিকা ছাড়াও পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে ফ্রান্স।

আরও পড়ুন: ভারত-পাক পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়ঙ্কর: ডোনাল্ড ট্রাম্প

অভিজ্ঞ মহলের মত, নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে হামলা হলে আমেরিকা প্রথমেই পাল্টা আক্রমণের কথা ভাবে। "যেখানে ওদের স্বার্থের প্রশ্ন ওঠে, সেখানে সংযম শব্দটা ওদের অভিধানেই নেই। ট্রাম্পের 'কড়া জবাব' নিয়ে মন্তব্যের সেটাই প্রেক্ষিত," বলছে জনৈক সূত্র। অবশ্য সেই সূত্র এই মর্মে সতর্ক করে দিয়েছে যে ট্রাম্প প্রায়শই রীতিবিরুদ্ধ ভাষা ব্যবহার করে থাকেন, যা কূটনীতির আওতায় পড়ে না।

"ভারত খুব জোরালো কিছু একটা করার কথা ভাবছে। সদ্য প্রায় পঞ্চাশজনকে একটি হামলায় হারিয়েছে তারা। কাজেই ওদের মনোভাব আমি বেশ বুঝতে পারছি," শুক্রবার ভারতের আত্মরক্ষার অধিকার প্রসঙ্গে বলেন ট্রাম্প। চিনের উপ-প্রধানমন্ত্রী লিউ হে-র নেতৃত্বাধীন একটি বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই মন্তব্য করেন তিনি।

"বর্তমানে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে ভয়ংকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে...খুুুব, খুব খারাপ পরিস্থিতি, এবং খুব বিপজ্জনক পরিস্থিতি দু'দেশের মধ্যে। আমরা চাই এটা শেষ হোক। অনেক মানুষ সদ্য প্রাণ হারিয়েছেন, এবার এসব বন্ধ হোক," বলেন তিনি। "আমরা আলোচনা করছি, আরও অনেকেই আলোচনা করছেন, কিন্তু আপাতত খুব সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখে চলতে হচ্ছে। যা ঘটেছে, তার ফলে ভারত পাকিস্তানের মধ্যে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাতে ভালোমতোই জড়িত।" আমেরিকা ছাড়া আর কে "আলোচনা করছে", তা অবশ্য স্পষ্ট করে বলেন নি তিনি।

ট্রাম্পের দাবি, পাকিস্তানকে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের মার্কিন অর্থসাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার পরেও দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কে উন্নতি হয়েছে। ট্রাম্পের কথায়, "আমি পাকিস্তানকে ১.৩ বিলিয়ন ডলারের অর্থসাহায্য বন্ধ করেছি, যে আর্থিক সহায়তা পূর্বতন প্রেসিডেন্টদের আমল থেকে পাকিস্তান এতদিন পেয়ে আসছিল। পাকিস্তান এই সাহায্যের সুবিধে নিচ্ছিল, কিন্তু সেটা একতরফা হয়ে যাচ্ছিল। আমাদের প্রাপ্য নীতিগত সাহায্য পাকিস্তানের তরফে আমরা পাচ্ছিলাম না।এবং সত্যি কথা বলতে, তা সত্ত্বেও পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে সাম্প্রতিক অতীতে।"

ওয়াকিবহাল সূত্র অনুযায়ী, পাকিস্তানের সঙ্গে 'সুসম্পর্ক' জনিত এই বিবৃতির পিছনে নিহিত উদ্দেশ্য আছে। আফগানিস্তান থেকে সরে যাওয়ার ব্যাপারে মার্কিন সরকারের কথাবার্তা চলছে তালিবানের সঙ্গে। এবং এই প্রক্রিয়ায় পাকিস্তানের সাহায্য প্রয়োজন আমেরিকার।

Donald Trump pakistan kashmir
Advertisment