ষোলো ঘণ্টা পর নামলো স্তব্ধতা। বন্ধ হলো গোলাগুলির শব্দ। সোমবার দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার পিংলেনা এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসবাদীদের মধ্যে ১৬ ঘণ্টা ধরে চলল গুলি বিনিময়। দিনের শেষে মৃতদের তালিকায় রইলেন এক মেজর সহ ভারতীয় সেনাবাহিনীর চারজন কর্মী, একজন পুলিশকর্মী, এবং একজন সাধারণ নাগরিক। রইল তিন জৈশ-এ-মহম্মদ জঙ্গিও। ঘটনাস্থল থেকে আন্দাজ ১২ কিমি দূরে সেই স্থান, যেখানে ১৪ ফেব্রুয়ারি এক আত্মঘাতী জৈশ জঙ্গির ঘটানো ভয়াবহ গাড়ি বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারান অন্তত ৪০ জন সিআরপিএফ জওয়ান।
সোমবার ভোর রাতে জঙ্গিদের উপস্থিতির আগাম খবরের ভিত্তিতে শুরু হয় জম্মু কাশ্মীর পুলিশ এবং সেনাবাহিনীর এলাকা ঘিরে যৌথ তল্লাশি অভিযান। তল্লাশি চলাকালীন নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে জঙ্গিরা। যার ফলে শুরু হয় গুলি বিনিময়।
আরো পড়ুন: পুলওয়ামায় নিহত চার সৈনিক, দুই জঙ্গি, গুলির লড়াইয়ে হত মূল চক্রীও?
গুলির লড়াইয়ে জখম হয়েছেন সেনাবাহিনীর এক ব্রিগেডিয়ার, দক্ষিণ কাশ্মীরের ডিআইজি অমিত কুমার, এবং সেনাবাহিনীর এক লেফটেন্যান্ট কর্নেল। নিহত সেনাকর্মীরা হলেন মেজর ভিএস ঢোন্ডিয়াল, হাবিলদার শেও রাম, সেপাই হরি সিং এবং সেপাই অজয় কুমার। নিহত পুলিশকর্মীর নাম হেড কনস্টেবল আব্দুল রশিদ কালাস।
পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, নিহত তিন জঙ্গির মধ্যে দুজনের নাম হিলাল নাইকো, যে পিংলেনারই বাসিন্দা, এবং পাকিস্তানি নাগরিক কামরান, ১৪ ফেব্রুয়ারির হামলায় যার সম্ভাব্য ভূমিকা এখনও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তৃতীয় জঙ্গির পরিচয় জানা যায় নি এখন অবধি। ঘটনাস্থল থেকে রাইফেল সহ বেশ কিছু অস্ত্রশস্ত্র এবং গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে এক এনকাউন্টারে জৈশ-এ-মহম্মদের কার্যনির্বাহী কমান্ডার মুফতি ওয়াকাসের মৃত্যুর পর তার কাজের দায়িত্ব পড়ে কামরানের ওপর। পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ থেকেই পুলওয়ামা এবং অবন্তীপোরায় সক্রিয় ছিল কামরান, এবং বিভিন্ন নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে একাধিক হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পুলিশের খাতায় নাম ছিল তার। পুলিশের জারি করা এক বিবৃতি অনুযায়ী, স্থানীয় যুবকদের সংগঠনে নিয়ে আসার দায়িত্বে ছিল কামরান, এবং এ কাজের জন্য সে নির্ভর করত নিহত দুই সন্ত্রাসবাদী নুর ত্রালি ও মুফতি ওয়াকাসের পুরোনো জৈশ নেটওয়ার্কের ওপর।
বাদামি বাগ ক্যান্টনমেন্টে সেনাবাহিনীর ১৫ কর্পসের শ্রীনগর সদরে একটি অনুষ্ঠানে নিহত সেনা কর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
Read the full story in English