২০ বছরের ছেলেটি যে জঙ্গি হয়ে উঠবে, তা বোধহয় ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি উপত্যকা। দ্বাদশ শ্রেণির পড়া শেষ না করেই করাতকলে কাজে লেগে পড়েছিল ওই তরুণ। তারপর? হঠাৎই একদিন বেপাত্তা হয়ে যায় সে। পরে তার পরিজনরা জানলেন তাঁদের ঘরের ছেলে একজন জঙ্গি। দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার গুন্ডিবাগ গ্রামের সেই তরুণই এখন খবরের শিরোনামে। নাম, আদিল আহমেদ দার। কাশ্মীরে আত্মঘাতী হামলার মূল চক্রী এই আদিল। যার হামলাতেই উপত্যকায় কমপক্ষে ৩৭ জন জওয়ানের রক্ত ঝরেছে।
সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, গত বছরের ১৮ মার্চ বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল আদিল। তারপর আর ফেরেনি। ওই একইদিনে নিখোঁজ হয়েছিল আদিলের বন্ধু সমীর আহমেদ। কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের জুওলজি-র স্নাতকোত্তর পড়ুয়া ছিল সমীর। ছেলের হদিশ না পেয়ে স্থানীয় থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেছিল আদিলের পরিবার। কয়েকদিন পরই আদিলের খোঁজ পেল পরিবার। হাতে একে-৪৭ নিয়ে সোশ্যাল সাইটে আদিলের ছবি পোস্ট করা হয়। পোস্টে লেখা ছিল ‘ওয়াকাস কমান্ডো।’
আরও পড়ুন, কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় ‘গোয়েন্দা ব্যর্থতা’, মানলেন রাজ্যপাল
জঙ্গি হামলায় নিহত কমপক্ষে ৩৭ জওয়ান। অলঙ্করণ: সি আর শশীকুমার
বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার মূল চক্রী এই আদিলই। এমনই দাবি করেছে জইশ-ই-মহম্মদ। আদিলই আত্মঘাতী হামলা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে ওই জঙ্গিগোষ্ঠী। গতকাল হামলার পর একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করে জইশ। যেখানে আদিলকে বলতে দেখা গিয়েছে, সে ফিদায়েঁ দলের সদস্য।
আরও পড়ুন, কুড়ি বছরে কাশ্মীরে সবচেয়ে প্রাণঘাতী জঙ্গী হামলা, মৃত কমপক্ষে ৩৭
আদিলের বাবা গুলাম হাসান দার ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, ‘‘বাড়ি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর আমাদের সঙ্গে একবার দেখা করেছিল ও। ওর তুতো ভাইও জঙ্গি ছিল। জঙ্গিদলে যোগ দেওয়ার ১১ দিন পরই মারা গিয়েছিল।’’ আদিলের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে হিজবুল মুজাহিদিন কমান্ডার বুরহান ওয়ানির মৃত্যুর প্রতিবাদে উপত্যকায় বিক্ষোভ প্রদর্শনের সময় জখম হয়েছিল আদিল। তার পায়ে গুলি লেগেছিল।
দিলের বাবা আরও বলেছেন, ‘‘সমস্যার সমাধান না করে রাজনৈতিক নেতারা রাজনীতির খেলা খেলছেন। কেন তরুণরা হাতে বন্দুক তুলে নিচ্ছে, সেটা খতিয়ে দেখা উচিত।’’
Read the full story in English