ফের তালিবানরাজ। বিধ্বস্ত আফগানিস্তান। প্রাণভয়ে দেশ ছাড়তে মরিয়া সেদেশের বাসিন্দারা। বিমানবন্দরে হুড়োহুড়ি, বিশৃঙ্খলা। নিজের দেশ, পরিবার-পরিজনদের কথা ভেবে দিশাহারা এ দেশে পড়তে আসা আফগান পড়ুয়ারা। চরম আতঙ্কে এখন দিন যাপন তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে প্রায় হাজার আফগান পড়ুয়াকে দত্তক নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পুনের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের। এ নিয়ে সরকারের সঙ্গেও কথা বলা হবে বলে দাবি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'শারহ' কর্তৃপক্ষের।
পুনে সহ গোটা মহারাষ্ট্রেই বহু আফগান পড়ুয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করেন। কেউ আসেন সরকারি বৃত্তি নিয়ে, আবার অনেকেই পড়েন ব্যক্তিগত খরচে। দেশের দখল তালিবানদের হাতে যাওয়ায় এইসব পড়ুয়ারা এখন চরম অনিশ্চয়তায়। কেউ কেউ তাঁদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারলেও বেশিরভাগই তা করে উঠতে পারেননি। আফগানিস্তানে যোগযোগই এখন যেন অসাধ্য সাধন। এদিকে দেশের বেহাল অবস্থায় অর্থ সংকটে র সম্মুখীন হতে পারেন এ দেশে পড়তে আসা বহু আফগান পড়ুয়া। ভবিষ্যতের কথা ভেবে রাতের ঘুম উড়েছে তাঁদের।
এই অবস্থায় পড়ুয়াদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে পুনের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শারহদ। এ দেশে আফগান পড়ুয়াদের সহায়তায় খোলা হয়েছে হেল্পলাইন নম্বর। যা বেজে চলেছে অনবড়ত। সেখানেই সাহায্যের কাতর আবেদন জানাচ্ছেন এ দেশের আফগান পড়ুয়া। ভারত থেকে ছুটিতে আফগানিস্তানে যাওয়া বহু পড়ুয়ারাও এখন ফিরতে আগ্রহী।
আরও পড়ুন- তালিবানের সঙ্গে পাকিস্তানের গলায়-গলায় দোস্তি, কী ভাবে?
আরও পড়ুন- বাড়ি বাড়ি চলছে তল্লাশি, ‘শত্রুদের’ খুঁজে খুঁজে খুন করছে তালিবানরা
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জয় নাহার দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন, "আফগানিস্তানের দূতাবাস রয়েছে মুম্বইতে। সেখানে ফোন করে সহায়তার আনুরোধ করা হলেও সাহায্য মিলছে না। পড়ুয়েদের অবস্থা করুণ। অবস্থা ভয়াবহ। আমরা পুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলবো। আফগান পড়ুয়াদের জন্য বিশেষ আর্থিক ছাড়া বা সবটাই মুকুবের আর্জি জানাবো। এটা বাস্তবে সম্ভব হলে বিশ্বের চোখে ভারতের অবস্থান অনেকটাই উঁচুতে চলে যাবে।"
একদিকে উদ্বেগ, অন্যদিকে আতঙ্ক। এই অবস্থায় পড়ুয়াদের মানসিক চাপ ঊর্ধ্বনমুখী। ফলে এ দেশে পড়তে আসা প্রায় হাজার আফগান পড়ুয়াকে দত্তক নেওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। এর আগে কাশ্মীরের একাধিক শিক্ষার্থীকে দত্তক নিয়ে সহায়তার হাত বাড়িয়েছিল শারহদ।
দত্তকের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে ইতিমধ্যেই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি শিখ সংগঠনের সঙ্গে কথা বলেছে বলে খবর। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি সংগঠন এগিয়ে এসেছে। এখন সরকারের অনুমতি মিললেই কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন শারহদের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সঞ্জয় নাহার।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন