বড়দিনে নেপালে ক্ষমতায় ফিরল বাম সরকার। প্রধানমন্ত্রী হলেন মাওবাদী নেতা পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। নেপালের তৃতীয় বৃহত্তম দল সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) দলের তিনি চেয়ারম্যান। এর আগে ২০০৮-০৯, ২০১৬-১৭ দু'বার নেপালের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন এই শীর্ষ মাওবাদী নেতা। ২০১৭-য় ক্ষমতা হারানোর পাঁচ বছর পর ফের তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে ফিরলেন।
নেপালের সংবিধানের ৭৬ নম্বর অনুচ্ছেদের ২ ধারায় রবিবার প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করেছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী। তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, রবিবার বিকেল ৫টার মধ্যে নেপালের প্রতিনিধি সভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা জোগাড় করতে পারলে প্রধানমন্ত্রী পদে দাবি জানানো যাবে। প্রচণ্ড নির্দিষ্ট সময়ের আগেই সমর্থন জোগাড় করে ফেলেন। ফলে তাঁর প্রধানমন্ত্রী হতে কোনও অসুবিধা হয়নি।
প্রেসিডেন্টের কাছে সমর্থনের প্রমাণ হিসেবে প্রচণ্ড সিপিএন-ইউএমল দলের চেয়ারম্যান কেপি ওলি শর্মা, রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টির সভাপতি রবি লামিছানে, রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টির প্রধান রাজেন্দ্র লিংদেন-সহ অন্যান্যদের নিয়ে পৌঁছন। সব মিলিয়ে নেপালের প্রতিনিধি সভার ২৭৫ সদস্যের ১৬৫ জনেরই সমর্থন রয়েছে প্রচণ্ডের দিকে। তাই প্রচণ্ডকে প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত করতে দ্বিধা করেননি নেপালের প্রেসিডেন্ট। সোমবার বিকেল ৪টায় প্রচণ্ড নেপালের প্রধানমন্ত্রী পদে আনুষ্ঠানিকভাবে শপথগ্রহণ করবেন।
আরও পড়ুন- সংঘাত আবহে চিনের বড় বিবৃতি, কীসের ইঙ্গিত?
১৯৫৪ সালে ১১ ডিসেম্বর নেপালের কস্কি জেলার ধিকুরপোখারিতে পুষ্পকমল দাহালের জন্ম। ১৯৮১ সালে নিষিদ্ধ সিপিএন (ফোর্থ কনভেনশন) দলে যোগ দেন। বিভিন্ন ছোট সশস্ত্র আন্দোলনবাদী দলগুলো মিলে সিপিএন (মাওবাদী কেন্দ্র) তৈরি হলে প্রচণ্ড হয়ে ওঠেন অন্যতম মাথা। ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত তিনি নেপাল সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন চালিয়েছেন। নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদে বড় ভূমিকা নেন। ২০০৬ সালের নভেম্বরে শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে সশস্ত্র বিপ্লব থেকে মূলস্রোতের রাজনীতিতে চলে আসেন। তার দু'বছর পরেই হন নেপালের প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবার নেতৃত্বাধীন জোট থেকে বেরিয়ে আসেন প্রচণ্ড। এরপর কেপি ওলির সঙ্গে তাঁর চুক্তি হয়। সেই চুক্তি অনুযায়ী সরকারের প্রথম দফায় প্রচণ্ড নেপালের প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন। পরের দফায় প্রধানমন্ত্রী হবেন ওলি।