কুনো জাতীয় উদ্যানে, খোলা জঙ্গল চিতাগুলিকে বড় ঘেরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ছয়টি চিতার গলা থেকে রেডিও কলার খুলে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে বড় ঘেরে ১১ টি চিতা রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি পুরুষ ও পাঁচটি মহিলা। চিতা বিশেষজ্ঞদের একটি দল চিতাদের শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করছে। মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে একের পর এক চিতার মৃত্যু প্রশ্ন তুলেছে ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে।
ভারতে চিতাদের পুনর্বাসনের পরিকল্পনা প্রজেক্ট চিতা-এর অধীনে গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর নামিবিয়া থেকে চিতাদের কুনো ন্যাশানাল পার্কে আনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই চিতাগুলিকে ঘেরে ছেড়ে দিয়েছিলেন। এর পরে, এই বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সাতটি পুরুষ এবং পাঁচটি মহিলা সহ ১২টি চিতাকে কুনো ন্যাশানাল পার্কে আনা হয়।এদিকে একের পর এক চিতার মৃত্যু নিয়ে সরকার ও প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।চিতার মৃত্যু নিয়ে চিতা গবেষণা প্রকল্পের একজন গবেষক ডক্টর বেটিনা ওয়াচটার বলেন, ‘নামিবিয়ায়, চিতা যে স্থানে ছিল সেই স্থান ছিল অনেকটা বড় এবং শিকারের ঘনত্ব কম, পূর্ব আফ্রিকার অঞ্চলগুলি ছোট এবং শিকারের ঘনত্ব বেশি – তবে অঞ্চলগুলির মধ্যে দূরত্ব স্থির এবং এর মধ্যে কোনও নতুন অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয় না৷ কুনোতে পুনঃপ্রবর্তন পরিকল্পনার জন্য, এই দূরত্বগুলি উপেক্ষা করা হয়েছিল,” তিনি আরও বলেন, ‘চিতার ঘনত্ব শুধুমাত্র খাবারের প্রাপ্যতার উপর নির্ভর করে না’। পাশাপাশি বর্ষার মরসুমে রেডিও কলারের কারণে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাশাপাশি চিতা বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন আর্দ্র আবহাওয়ায় চিতার গলায় লাগানো ‘স্যাটেলাইট কলার’প্রদাহ, ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এবং সেপ্টিসেমিয়ার দিকে নিয়ে যাচ্ছে চিতাদের। তা থেকেই মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক চিতার। মৃত্যুর পিছনে অন্য কোন কারণ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে আমাদের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষা করা দরকার। সেকথা বিবেচনা করেই ১০টি চিতার গলায় লাগানো রেডিও কলার খুলে নেওয়ার বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করা হচ্ছে”। কেন্দ্রের তরফে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার আন্তর্জাতিক চিতা বিশেষজ্ঞ এবং পশুচিকিৎসকদের কাছ থেকেও পরামর্শ নেওয়া হচ্ছে।
মধ্যপ্রদেশের কুনো ন্যাশনাল পার্কে ক্রমাগত চিতার মৃত্যুর পর এখন নামিবিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞ ও বন বিভাগ চিতাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে। একই সঙ্গে কুনো জাতীয় উদ্যানের খোলা জঙ্গল থেকে সব চিতাকে ঘেরে স্থানান্তর করা হয়েছে। ছয়টি চিতার গলা থেকে রেডিও কলার খুলে ফেলা হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। বর্তমানে ঘেরে ১১ টি চিতাবাঘ রয়েছে। এর মধ্যে ছয়টি চিতা পুরুষ ও পাঁচটি মহিলা। কু
শনিবার সন্ধ্যায় এই দলটি পবন নামে একটি পুরুষ চিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। এরপর তাকে খোলা জঙ্গল থেকে বড় ঘেরে স্থানান্তর করা হয়। বিশেষজ্ঞদের দল জানিয়েছে, পরবর্তী স্বাস্থ্য পরীক্ষা না হওয়া পর্যন্ত চিতাটিকে বড় ঘেরে রাখা হবে। রবিবার কুনো জাতীয় উদ্যানের ডিএফও প্রকাশ ভার্মা এক প্রেস নোট জারি করে এই তথ্য জানিয়েছেন।
কুনো জাতীয় উদ্যানের বড় ঘেরে ছয়টি পুরুষ ও পাঁচটি স্ত্রীসহ মোট ১১টি চিতা রয়েছে। বাকি চারটি চিতা খোলা জঙ্গলে রয়েছে। পবন নামে একটি চিতাসহ মোট তিনটি চিতার ঘাড়ে ক্ষত ও সংক্রমণের পর দক্ষিণ আফ্রিকা ও নামিবিয়ার বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে কুনো ন্যাশনাল পার্কে মোট ছয়টি চিতার গলা থেকে রেডিও কলার আইডি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। শীঘ্রই অন্যান্য চিতার রেডিও কলার আইডি সরিয়ে ফেলার সিদ্ধান্তও দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার চিতা বিশেষজ্ঞরা নিতে পারেন।
তিন দিন আগে চিতার মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। শুনানির সময়, আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে কিছু চিতাকে কুনো থেকে রাজস্থানে স্থানান্তর করার কথা বিবেচনা করতে বলে।