ভোটের আগে রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টে জোর ধাক্কা খেল মোদী সরকার। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রাফাল চুক্তি সম্পর্কিত নথির গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে কেন্দ্রের আপত্তি বুধবার নাকচ করে দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত। ফাঁস হওয়া রাফাল নথিকে ‘প্রামাণ্য নথি’ হিসেবে গ্রাহ্য করার দাবিতে আপত্তি জানিয়েছিল সরকার। কেন্দ্রের সেই আপত্তি এদিন খারিজ করে দিল প্রধানবিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর ডিভিশন বেঞ্চ। রাফাল মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানাল কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে টুইটে কংগ্রেসের তরফে বলা হয়েছে, ‘‘এটা দেশের জয়।’’
প্রসঙ্গত, এর আগে রাফাল মামলায় মোদী সরকারকে ক্লিনচিট দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ের পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি ও আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। গতমাসে পুনর্বিবেচনার আবেদনের শুনানিতে রাফাল চুক্তি সংক্রান্ত গোপন নথি সামনে আনেন আবেদনকারীরা। দ্য হিন্দু সংবাদপত্র ও সংবাদসংস্থা এএনআই-তে এই নথি প্রকাশ হয়। এই গোপন নথিকেই হাতিয়ার করে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন আবেদনকারীরা। কেন্দ্রের তরফে দাবি করা হয় ওই ‘চুরি যাওয়া নথি’-কে ‘প্রামাণ্য নথি’ হিসেবে গ্রাহ্য করে রায় পুনর্বিবেচনা করা যায় না। কিন্তু, বুধবার প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়ে দিল, ওই নথির আলোকেই এ মামলার পুনর্বিবেচনা করা হবে।
আরও পড়ুন: রাফাল নথি নিয়ে কেন্দ্রের দাবি মানল না সুপ্রিম কোর্ট
গোপন নথি প্রকাশ্যে আসার পর সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল (এজি) কে কে বেণুগোপাল প্রথমে দাবি করেন, প্রতিরক্ষামন্ত্রক থেকে রাফাল সংক্রান্ত নথি চুরি গিয়েছে। এজির এমন দাবির পরই প্রতিরক্ষামন্ত্রকের সুরক্ষা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠতে থাকে। বিরোধীরা এ বিষয়ে সরব হওয়ার পরই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে অ্যাটর্নি জেনারেল দাবি করেন, নথি চুরি হয়নি, তবে বেআইনি ভাবে ওই নথি ফোটোকপি করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারি গোপনীয়তাকে লঙ্ঘন করেছে এবং এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এরপরই তিনি বলেন, এই নথিকে ‘প্রামাণ্য নথি’ হিসেবে গ্রাহ্য করা যায় না।
উল্লেখ্য, ৩৬টি রাফাল যুদ্ধ বিমান কেনার ব্যাপারে অনিয়ম হয়েছে বলে যে সমস্ত জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল, ১৪ ডিসেম্বর সেগুলি সবই খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের নেতৃত্বে গঠিত তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছিল, রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার ক্ষেত্রে কেন্দ্রের চুক্তি প্রক্রিয়ায় আদালত সন্তুষ্ট। এই চুক্তিতে কোনওরকম হস্তক্ষেপ করা হবে না বলে জানিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এরপরই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা পড়ে আদালতে।