বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে চায় ভারতীয় রেল। ১০৯টি রুটে ১৫১টি ট্রেন চালানোর দায়িত্ব বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে ইতিমধ্যেই টেন্ডার ডাকা হয়েছে। কেন্দ্রীয় এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো। মোদী সরকারের রেলে বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ করে কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী বলেছেন, 'মানুষ সরকারকে উপযুক্ত জবাব দেবে।' কর্মী ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাম দলগুলো।
রাহুল গান্ধী টুইটে জানান, 'রেল হল গরিবের লাইফলাইন। সরকার সেটিও গরিবের হাত থেকে কেড়ে নিতে চায়। সরকার রেলকে কেড়ে নিতেই পারে। কিন্তু মনে রাখবেন মানুষ একদিন এর সমুচিত জবাব দেবে।' করোনা প্রকোপের মধ্যেই মোদী সরকার রেলের বেসরকারিকরণের মতো পদক্ষেপ কেন এত 'তাড়াতাড়ি করতে পাগলা হয়ে উঠেছেন' তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষের মণু সিংভি। তার কথায়, 'সিংভি জানান, রেলের বেসরকারিকরণ হবে বলে মার্চেই সংসদে ঘোষণা করেছিলেন রেলমন্ত্রী। সংসদে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা পর্যন্ত সরকারের অপেক্ষা করা উচিত।'
বেসরকারিকরণের তীব্র প্রতিবাদ করছে বামেরা। সিপিএমের পক্ষে জানানো হয়েছে যে, গণপরিবহনের অন্যতম অঙ্গ রেল। রাষ্ট্রায়ত্ব এই ক্ষেত্রগুকে পোক্ত করার বদলে তা বেসরকারি হাতে দিয়ে দুর্বল করার চেষ্টা করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রেল বেসরকারি সংস্থার দ্বারা চললে কর্মীসঙ্কোচনের ভয় রয়েছে।
সিপিআই-য়ের সাধারণ সম্পাদক ডি রাজা বলেছেন, 'বেসরকারিকরণ করে জাতীয় সম্পদ ও রাষ্ট্রায়ত্ব ক্ষেত্রগুলিকে আঘাতের চেষ্টায় অনড় রয়েছে মোদী সরকার।' দেশের নিম্নমুখি অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও সরব বামেরা।
উল্লেখ্য, ১০৯টি রুটে চলবে ১৫১টি প্যাসেঞ্জার ট্রেন। যা চালাবে কোনও বেসরকারি সংস্থা। ডিসেম্বরেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এবার তার জন্য শুরু হল রিকোয়েস্ট ফর কোয়ালিকেশনের প্রক্রিয়া। অর্থাৎ এই ১৫১টি ট্রেন চালাতে কে বা কারা আগ্রহী তা জানার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার। ভারতীয় রেল বিশ্বের বৃহত্তম রেলওয়ে নেটওয়ার্ক। সেখানে নিত্য প্রায় ১৩ হাজার ট্রেন চলে। রেলে প্রায় ১২ লক্ষ লোক কাজ করেন। যাত্রী পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রতি বছর বিপুল ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর ফলে রেলের ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে বাড়তে বৃহৎ অঙ্কে পৌঁছেছে। সেই প্রেক্ষিতেই রেলের বেসরকারিকরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন