বালাসোর ট্রেন দুর্ঘটনায় সিবিআই তদন্তের সুপারিশ করল রেলবোর্ড। রবিবার সংবাদমাধ্যমকে একথা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণো। তিনি জানিয়েছেন যে রেল বোর্ড সুপারিশ করেছে, ওড়িশা ট্রেন দুর্ঘটনাটি আরও পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের জন্য সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (সিবিআই)-এর কাছে হস্তান্তরিত করা হোক। তার মধ্যেই ট্রেন দুর্ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্ত চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলাও (পিআইএল) দায়ের হয়েছে।
রেলমন্ত্রী আরও জানান যে দুর্ঘটনাস্থল বাহানাগা বাজার স্টেশন চত্বরে আপ মেইন লাইন (চেন্নাইয়ের দিকে), ডাউন মেইন লাইন (হাওড়ার দিকে) ইতিমধ্যেই মেরামত করা হয়েছে। শুক্রবারের এই ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই বেড়ে হয়েছে ২৭৫। আহত হয়েছেন ১,০০০ জনেরও বেশি। এই বালাসোরেই দুটি ট্রেন- শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসের বগি লাইনচ্যুত হয়েছে।
বৈষ্ণো আশ্বাস দেন, বুধবারের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথগুলোয় স্বাভাবিক ট্রেন পরিষেবা চালু হবে। পরিষেবা স্বাভাবিক না-থাকায় রবিবার বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। কয়েকটি ট্রেনের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার কিছু ট্রেনের যাত্রাপথকে সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। একই সমস্যা আগামী সোম এবং মঙ্গলবারও বহাল থাকবে। আর, যে ট্রেনগুলো চলছে, সেগুলোও বেশ কয়েকঘণ্টা লেট করে চলছে বলেই রেল মন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- দুর্ঘটনার সময় করমণ্ডল চলছিল ১২৮ কিলোমিটার বেগে, জানাল রেলবোর্ড
এই পরিস্থিতিতে বালাসোর দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বৈষ্ণো জানিয়েছেন, পয়েন্ট মেশিন ও ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ের সমস্যায় এতবড় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিংয়ে যে পরিবর্তনটি করা হয়েছিল, তা-ই এতবড় দুর্ঘটনা ডেকে এনেছে। সেই সমস্যা ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করা হয়েছে। বৈষ্ণো জানিয়েছেন, এই ঘটনায় ট্রেনের দুর্ঘটনারোধী ব্যবস্থা 'কবচ'-এর কিছু করার ছিল না। গতবছরই অবশ্য দুর্ঘটনা রোধে 'কবচ'-এর সাফল্যর পক্ষে গলা চড়িয়েছিলেন রেলমন্ত্রী। বালাসোর দুর্ঘটনার পর যা নিয়ে বিরোধীরা কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। একইসঙ্গে, দুর্ঘটনার নৈতিক দায়িত্ব নিয়ে রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছেন। বিজেপি অবশ্য পালটা দলগতভাবে, রেলমন্ত্রী হিসেবে বৈষ্ণোর আন্তরিকতার পক্ষে সুর ধরেছে।