করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সবচেয়ে বেশি চাহিদা বেড়েছে অক্সিজেনের। আর সেই অক্সিজেনের জোগান দিতে অক্সিজেন এক্সপ্রেস চালু করেছে ভারতীয় রেল। ট্যাংকার মাধ্যমে একাধিক শহরে পাঠানো হচ্ছে লিক্যুইড অক্সিজেন। এই আবহে রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের মন্তব্য ঘিরে শোরগোল পড়ল সামাজিক মাধ্যমে।রবিবার এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেছেন, ‘রাজ্যগুলিকে চিকিৎসায় অক্সিজেনের চাহিদা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।‘ আর এই মন্তব্য ঘিরে ট্যুইটারে হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ডিং।
শরীরে অক্সিজেনের চাহিদা নিয়ন্ত্রণ! তা-ও কি সম্ভব! সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, “মোদী সরকারের মন্ত্রী কি তবে কম করে শ্বাস নিতে বলছেন?” কারও প্রশ্ন, “রোগী কতটা অক্সিজেন নেবেন, সেটাও কি এ বার থেকে গয়ালই ঠিক করে দেবেন?” কেউ বিদ্রুপ করে ডাক দিয়েছেন, “কম করে শ্বাস নিন প্রত্যেকে।”
এদিকে, টিকা থেকে ওষুধ বিভিন্ন বিভিন্ন বিষয় কেন্দ্রীয় স্তর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। আর কোথাও সমস্যা হলেই বা পরিস্থিতি হাতের বাইরে গেলে দায় চাপানো হচ্ছে রাজ্যগুলির ঘাড়ে। ঠিক তেমনটাই ঘটছে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় আবশ্যক অক্সিজেনের জোগানে ঘাটতির প্রসঙ্গে। প্রতি দিন দু’লক্ষের বেশি নতুন সংক্রমণের খবর আসছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে অক্সিজেনের চাহিদাও।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গয়ালের মন্তব্যে কংগ্রেসের দিগ্বিজয় সিংহের প্রথম প্রতিক্রিয়া, “হাউ স্টুপিড পীযূষজি! প্রয়োজনের উপরে নির্ভর করে অক্সিজেনের চাহিদা। সেটা কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব? প্রথম দিন থেকে চিকিৎসকেরা বলে আসছেন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার অন্যতম অস্ত্র অক্সিজেন। কিন্তু কেন্দ্র জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার কোনও পরিকল্পনাই করে উঠতে পারেনি।”
কংগ্রেসের মণীশ তিওয়ারি বলেন, “পীযূষ গয়াল দায় এড়াচ্ছেন। মানুষ মারা যাচ্ছেন, এ সময় এটা মেনে নেওয়া যায় না। এক জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কাছে এমনটা আশা করা যায় না।”
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে গয়াল বলেন, “রোগীদের ততটুকুই অক্সিজেন দিতে হবে, যতটা তাঁদের দরকার। কিছু জায়গা থেকে অপচয়ের খবর আসছে। কিছু ক্ষেত্রে দরকার না-থাকা সত্ত্বেও অক্সিজেন দেওয়ার খবর আসছে।”
এই রকম তথ্যহীন আলগা মন্তব্য দিয়েও ক্ষতি সামাল দিতে পারেননি মোদী সরকারের এই মন্ত্রী। অক্সিজেন অপচয়ের অভিযোগকে ভিত্তিহীন মনে করছেন নেটিজ়েনরা। এক জন লিখেছেন, “আমরা এমন এক সময়ে রয়েছি, যখন বিদ্রুপের মৃত্যু হয়েছে। বাস্তবই বিদ্রুপের জায়গাটা দখল করেছে।”
এক নেটিজ়েন লিখেছেন, “চাহিদা নিয়ন্ত্রণের অর্থ মানুষকে তার প্রয়োজনের সময় অক্সিজেন না-দেওয়া।” একজন আবার শূল ছবির একটা সংলাপ তুলে বলেছেন, মন থেকে হেসে দেখাও।‘ আর এই সমালোচনার সঙ্গেই জুড়েছে হ্যাশট্যাগ, ‘রিজ়াইনমোদী’।