Local Train Travel: শর্তসাপেক্ষে লোকাল ট্রেন চলাচলে ছাড় দিয়েছে রাজ্য-সহ রেল মন্ত্রক। এই রাজ্যে ৫০% যাত্রী নিয়ে চলছে লোকাল ট্রেন। সেটা অবশ্য খাতায়-কলমে। পাশাপাশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ট্রেনে না উঠতেই আবেদন করেছে রেল। কিন্তু কোনও বিধি, অনুনয়-বিনয়েই কাজ হচ্ছে না। উলটে ভিড়ে ঠাসা লোকাল ট্রেন ক্রমেই আতঙ্ক বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। এবার তাই লোকাল ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রিত করতে অন্য উপায় ভাবছে রেল মন্ত্রক। একমাত্র করোনার দুটি ডোজ রয়েছে, এমন যাত্রীর জন্য লোকাল বাধ্যতামূলক করতে চাইছে প্রশাসন।
কিন্তু কীভাবে সেই উপায় বাস্তবায়িত করা সম্ভব? রেল মন্ত্রক সূত্রে খবর, অসংরক্ষিত টিকিট বুকিং অ্যাপ ইউটিএস-র সঙ্গে কোউইন পোর্টালকে জুড়তে আগ্রহী রেল মন্ত্রক। এই দুটি অ্যাপ সংযুক্ত হয়ে গেলে একমাত্র ডবল ডোজ নিয়েছেন তাঁরাই অনলাইন টিকিট বুক করতে পারবেন। বাকিদের টিকিট কাটার আবেদন প্রত্যাখান করবে এই অ্যাপ।
জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয়স্তরে দেশের যে কোনও জায়গা থেকে ইউটিএস অ্যাপের মাধ্যমে লোকাল ট্রেনের টিকিট কাটা যায়। মধ্য এবং পশ্চিম রেলে এই অ্যাপ জনপ্রিয়। পূর্ব কিংবা দক্ষিণ-পূর্ব রেলে সাম্প্রতিককালে জনপ্রিয়তা পেয়েছে এই পদ্ধতি। তাই এই চার শাখায় যেসব যাত্রীরা অ্যাপ থেকে টিকিট কাটবেন, অত্যন্ত তাঁদের নিয়ন্ত্রিত করতে চাইছে রেল। কারণ অফলাইন টিকিটে টিকার শংসাপত্র দেখালেও, তাতে নেই প্রাপকের ছবি। ফলে চরম বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। এমনটাই মনে করছেন রেলকর্তারা।
পাশাপাশি পূর্ব রেল এবং দক্ষিণ-পূর্ব কতটা এই ব্যবস্থাকে প্রণয়ন করতে পারবে? সে নিয়ে এখনও অবস্থান চূড়ান্ত করেনি তারা। তবে এই পদ্ধতি কেন্দ্রীয় স্তরে চালু হলে অনেকটা ভিড় নিয়ন্ত্রিত হবে। এমনটাই অনুমান রেল মন্ত্রকের। এদিকে, কালীপুজোর দিন শতাংশ কমে প্রায় এক থাকল রাজ্যের দৈনিক করোনা সংক্রমণ। তবে করোনা গ্রাফ সেই ৯০০-র উপরেই রয়েছে। একই রয়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। একদিনে সংক্রমিত ৯১৮, মৃত ১৪। বুধবার সংক্রমিত ছিল ৯১৮, মৃত্যু ছিল সেই ১৪। ৪ নভেম্বর রাজ্যে মোট সংক্রমিত ১৫,৯৬,৩৩২, সক্রিয় সংক্রমণ ৮১৯৩। একই সঙ্গে কমেছে সুস্থতার হার এবং সংক্রমণের হার। রাজ্যে এখন সুস্থতার হার ৯৮.২৮% আর আক্রান্তের হার ২.২২%। মারণ ভাইরাসে রাজ্যে মোট মৃত ১৯,১৭৪ জন।
দৈনিক সংক্রমণ নিরিখে উদ্বেগ জিইয়ে রাখছে দক্ষিণবঙ্গ। বিশেষ করে কলকাতা এবং লাগোয়া দুই ২৪ পরগনা ও হুগলি। কলকাতায় একদিনে সংক্রমিত ২৪৫ জন, উত্তর ২৪ পরগনায় ১৪৭, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৭৫ জন। হুগলিতে ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমিত ৮১ জন, পাশের জেলা হাওড়ায় সংক্রমিত ৮০ জন। উত্তরবঙ্গের নিরিখে শীর্ষে দার্জিলিং। তারপরেই দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার এবং জলপাইগুড়ি।
দীপাবলির দিনে দেশের সংক্রমণ পরিস্থিতি মোটের উপর একই জায়গায়। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে দেশে করোনা আক্রান্ত ১২ হাজার ৮৮৫। একদিনে করোনায় মৃত্যু ৪৬১ জনের। স্বস্তি করোনামুক্তিতেও। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনাকে জয় করে সুস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার ৫৪ জন।
সুস্থ হচ্ছে দেশ? উত্তরটা বলার এখনই সময় না এলেও সংক্রমণ পরিস্থিতি মোটের উপর নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে। আজও ১২ হাজারের ঘরেই রয়েছে দেশের দৈনিক সংক্রমণ। সংক্রমণ কিছুটা কমলেও আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা নেই বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও একই কথাই বলেছেন। করোনা এড়াতে দেশের যোগ্য প্রত্যেককেই যাতে টিকাকরণের আওতায় আনা যায় সেব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাদের উদ্যোগী হতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন