সে রাজ্যে গোরুর দুধের থেকেও গো-মূত্রের চাহিদা দিন দিন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। গো-মূত্র বিক্রি করে মোটা অঙ্কের টাকাও পকেটে ঢুকছে কৃষকদের। এমন প্রেক্ষাপটেই কিনা একসঙ্গে অযত্নে না খেতে পেয়ে প্রাণ গেল ৫০০ গোরুর! হ্যাঁ, এমন ঘটনাই ঘটেছে রাজস্থানে। শুধু তাই নয়, সরকারের গোরু পুনর্বাসন কেন্দ্রেই একসঙ্গে অনাহারে মৃত্যু হয়েছে এই বিপুল সংখ্যক গোরুর। যে ঘটনা সামনে আসতেই তাজ্জব গোটা দেশ। ইতিমধ্যেই গোরুর মৃত্যুর তদন্ত শুরু করেছে দুর্নীতি দমন শাখা।
খোদ জয়পুর পুরসভার হিংগোনিয়া গোরু পুনর্বাসন কেন্দ্রেই গত দু’সপ্তাহে কার্যত অনাহারে মৃত্যু হয়েছে ৫০০টি গোরুর। কিন্তু কেন দু’বেলা খাওয়া জুটল না ওই গোরুদের? সরকারের ওই গোরু পুনর্বাসন কেন্দ্রের ২৬৬ ঠিকা কর্মীদের ধর্মঘটই এজন্য দায়ী। মে এবং জুন মাসের বকেয়া টাকা না মেলায় গত ২১ জুলাই থেকে ধর্মঘটের পথে হেঁটেছেন ওই ঠিকা কর্মীরা। যার জেরেই খাবার জোটেনি গোরুদের। দুর্নীতি দমন শাখার অতিরিক্ত এসপি এ প্রসঙ্গে জানান, "কয়েকদিন ধরে জল, খাবার দেওয়া হয়নি গোরুগুলোকে, যার ফলেই মৃত্যু হয়েছে।"
ইতিমধ্যেই এ ঘটনায় সরকারের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে রাজস্থান হাইকোর্ট। হাইকোর্টের এই পর্যবেক্ষণের পরই নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। গোটা ঘটনার তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে যান ওই অতিরিক্ত এসপি। এদিকে আটকে পড়া গবাদি পশুদের সরানোর কাজে হাত লাগায় পুরসভা। যদিও এজন্য পুরকর্মীদের আশপাশের গ্রামের বাসিন্দাদের সাহায্য নিতে হয়।
আরও পড়ুন, রাজস্থানের বাজারে দুধের সঙ্গে জোর টক্কর গো-মূত্রের
অন্যদিকে রাজ্যে গবাদি পশুর মৃত্যু নিয়ে রাজস্থানের বিজেপি সরকারের দিকে আঙুল তুলেছে কংগ্রেস। গবাদি পশুদেরই রক্ষা করতে পারে না এই সরকার বলে কটাক্ষ করেছে সে রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্ব। গবাদি পশুর সুরক্ষার দাবিতে শনিবার মিছিল করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রতাপ সিং খচারিওয়াস। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "সকাল ৯টা নাগাদ পিসিসি অফিস থেকে গোবিন্দ দেবজি মন্দির পর্যন্ত মিছিল করব।" পুরসভা গোটা বিষয়টা গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
খারাপ আবহাওয়া ও কর্মীদের ধর্মঘটের জেরেই গবাদি পশুর মৃত্যু হয়েছে বলে সাফাই দিয়েছেন পুর আধিকারিকরা। হিংগোনিয়ার পশু চিকিৎসক হরেন্দ্র বলেন, "বৃষ্টি অবশ্যই একটা ফ্যাক্টর ছিল।" একইসঙ্গে তিনি বলেন, কর্মীদের সংখ্যাও কম ছিল এবং বেশি সংখ্যক গোরুকে চাপাচাপি করে রাখা হয়েছিল। পুর কমিশনার হেমন্ত কুমার গেরা বলেন, আগামী দিনে আরও জেসিবি মেশিন এবং ডাম্পারের ব্যবস্থা করা হবে। এ ঘটনায় গোশালার দায়িত্বে থাকা ডেপুটি কমিশনার শের সিং লুহাদিয়া কর্তব্যরত অবস্থায় ছিলেন না বলে তাঁকে নোটিস দেওয়া হয়েছে।