পুজো শেষে চরণামৃতের মিঠে স্বাদ চেটে নিয়ে পুণ্য অর্জনের ছবি তো খুবই চেনা। অনেক এলাকায় তো পুজো শেষের মিষ্টিমুখ হিসেবে চরণামৃতের উপকরণে জায়গা করে নেয় গো-মূত্র। হ্যাঁ, গো-মূত্রকে অনেকেই প্রসাদ হিসেব মাথায় ঠেকিয়ে খেতে এতটুকুও নাক সিঁটকোন না। এবার সেই গো-মূত্রেরই চাহিদা তরতরিয়ে বাড়ছে রাজস্থানে। গোরুর দুধ বিক্রি করে যত না লাভের মুখ দেখছেন মরুভূমির দেশের কৃষকরা। তার থেকেও তাঁদের পকেটে বেশি টাকা ঢুকছে গো-মূত্রের দৌলতে। এমনকি, পিঙ্ক সিটিতে দুধের সমান দরেই বিকোচ্ছে গো-মূত্র।
বিশেষত, বাছুরের মূত্রের চাহিদা এই মুহূর্তে রাজস্থানে আকাশচুম্বী। ‘দ্য টাইমস অফ ইন্ডিয়া’র খবর অনুযায়ী, সে রাজ্যে বাছুরের মূত্র বিক্রি করে কৃষকদের আয় বেড়েছে ৩০ শতাংশ। ১৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা মূল্যে গো-মূত্র বিক্রি করা হচ্ছে সেখানে। অন্যদিকে গোরুর দুধ বিকোচ্ছে ২২ টাকা থেকে ২৫ টাকার মধ্যে।
হঠাৎ কী এমন হল যে, রাজস্থানে গো-মূত্রের এমন চাহিদা বাড়ল? সে রাজ্যের কৃষকদের মতে, কীটনাশকের পরিবর্তে ফসলে পোকামাকড়ের উপদ্রব কমাতে জৈব পদার্থ হিসেবে ব্যবহার করা হয় গো-মূত্র। ফসলের উপর গো-মূত্র ছিটোলে পোকামাকড়ের হাত থেকে রেহাই পাওয়া যায় বলে মত কৃষকদের। এতেই শেষ নয়, ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানেও গো-মূত্রের চাহিদা রয়েছে। অন্যদিকে চিকিৎসার কাজেও এর চাহিদা রয়েছে বলে মত কৃষকদের।
আরও পড়ুন, রাজস্থানে গরুচোর সন্দেহে গনপিটুনিতে ফের মৃত্যু
গো-মূত্রের সাহায্যে ক্যান্সার কোষকে নিকেশ করা যায়, গুজরাতের জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের এহেন দাবি সামনে আসার পরেই গো-মূত্রের চাহিদা রাতারাতি বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে, ওষুধ হিসেবে গো-মূত্র ব্যবহার করা যেতে পারে বলে দাবি করে আসছে বেশ কয়েকটি রাজ্যের সরকার। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওষুধের জন্য গো-মূত্র ব্যবহারে জোর দিতে বলেছিল উত্তরপ্রদেশ সরকার।
এ প্রসঙ্গে সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে উত্তরপ্রদেশ আয়ুর্বেদ দফতরের ডিরেক্টর আর আর চৌধরী বলেন,‘‘গো-মূত্র দিয়ে আটটি ওষুধ বানিয়েছে আয়ুর্বেদ বিভাগ। লিভারের সমস্যা, সন্ধির ব্যথা সারাতে এই ওষুধ কাজে দেবে। এছাড়াও রোগ-প্রতিরোধ জনিত সমস্যার ক্ষেত্রেও কাজে দেবে।’’