আচার্য পদে রাজ্যপালকে সরিয়ে বসানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। বিশ্ববিদ্যালয় আইন বদলের পথ দেখিয়েছিলেন তামিলনাড়ুন মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন। সেই পথের পথিক হয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে বেশ কয়েকটি বিরোধী শাসিক রাজ্যেও একই আইন আনার কথা বিবেচনাস্তরে রয়েছে। এবার তালিকায় সামিল কংগ্রেস পরিচালিত রাজস্থানের অসোক গেহলট সরকারও।
রাজস্থানে ২৪টি সরকার পরিচালিত বা অর্থ সাহায্যপ্রাপ্ত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। সেগুলির আচার্য পদে রয়েছেন রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্র। এবার ওই পদ থেকে তাঁকে সরাতে তৎপর গেহলট সরকার। আচার্য পদে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রীকে বসানোর তোড়জোড় চলছে। অন্যদিকে, ভিজিটর পদে বসানো হতে পারে রাজ্যপাল মিশ্রকে। অর্থাৎ আইনে রদবদল হলে ওই বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপাচার্য নিয়োগে আর রাজ্যপালের কোনও ভূমিকা থাকবে না।
বিশ্বিদ্যালয়ের নানা বিষয় নিয়ে গেহলট সরকার ও রাজ্যপাল কলরাজ মিশ্রের সঙ্গে বিরোধ তুঙ্গে। ফলে বহু কাজ থমকে যাচ্ছে। সেই সমস্যা সমাধানেই রাজস্থান সরকারের এই সিদ্ধান্ত। কেরালা, পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র এবং অন্ধ্রপ্রদেশ বিশ্বদ্যালয় আইনে বদলের কথা বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে রক্ষা করতে, সরকারি নীতির বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে আধিকারিকদের জবাবদিহি বাড়াতে এই রদবদল সহায়তা করবে বলে মনে করছে গেহলট সরকার। এছাড়া, রাজ্যপালের অফিসের সঙ্গে রাজ্যের স্বার্থের দ্বন্দ্ব এড়াতেওএই বদল সহায়তা করবে বলে মনে করা হয়।
খসড়া বিলে উল্লেখ, “রাজস্থানের রাজ্যপাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটর হবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি দ্বারা তাঁর নির্ধারিত অন্যান্য ক্ষমতা দর্শনার্থীর মতো থাকবে। রাজস্থান সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একজন চ্যান্সেলর নিয়োগ করবেন। চ্যান্সেলরের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর বা মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারা পরবর্তী চ্যান্সেলর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত, যেটা আগে নিয়ম ছিল।'
এতে আরও বলা হয়েছে যে এইভাবে নিযুক্ত চ্যান্সেলর একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বা পণ্ডিত হবেন যার বয়স ৬৫ বছরের বেশি এবং কিন্তু বয়স ৭৫ বছরের কম হবে। কোনও ব্যক্তিকে তিনটির বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর পদে নিযুক্ত করা যাবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা বোর্ড কর্তৃক মনোনীত একজন ব্যক্তি, ইউজিসি চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত একজন ব্যক্তি, চ্যান্সেলর কর্তৃক মনোনীত একজন ব্যক্তিকে নিয়ে গঠিত নির্বাচন কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে চ্যান্সেলর রাজ্য সরকারের সম্মতিতে উপাচার্য নিয়োগ করবেন।
এই বছরের শুরুর দিকে, রাজস্থানের গভর্নর কালরাজ মিশ্র হরিদেব যোশি ইউনিভার্সিটি অফ জার্নালিজম অ্যান্ড ম্যাস কমিউনিকেশনের ব্যবস্থাপনা বোর্ড এবং উপদেষ্টা কমিটির দুটি সভা বাতিল করেছিলেন। ফলে শুরু হয় রাজনৈতিক বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা রাজভবনের হস্তক্ষেপের অভিযোগে সরব হন।