রাজীব গান্ধী হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নলিনী শ্রীহরণকে এক মাসের প্যারোল দিল মাদ্রাজ হাই কোর্ট। ২৬ বছরের জেল জীবনে এই প্রথমবার সাধারণ প্যারোল পেলেন নলিনী। তিনি সশরীরে আদালতে হাজিরা দিয়েছিলেন।
বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ এবনং বিচারপতি নির্মল কুমারের ডিভিশন বেঞ্চ তামিল নাড়ু সরকারকে তাঁর মুক্তি প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার জন্য দশ দিন সময় দিয়েছেন। একই সঙ্গে বেঞ্চ আদেশ দিয়েছে প্যারোলে থাকাকালীন নলিনী কোনও সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না বা কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তির সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।
নিজের কন্যার বিবাহের প্রস্তুতির জন্য ৬ মাসের সাধারণ ছুটি চেয়েছিলেন নলিনী। গত ২৫ জুন আদালত এই আবেদনের ব্যাপারে নলিনীর বক্তব্য জানার জন্য তাঁকে সশরীরে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। নলিনীর মেয়ে জেলে জন্মেছিলেন। উচ্চশিক্ষা শেষ করার পর তিনি এখন বিদেশে থাকেন। নলিনীর স্বামী মুরুগান ওরফে শ্রীহরণ এখন ভেলোর কেন্দ্রীয় জেলে।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি নলিনী নিজে এ ব্যাপারে দরখাস্ত করেছিলেন। তাঁর মা একই রকম দরখাস্ত করেছিলেন গত ২২ মার্চ। রাজ্য সরকার তাতে সাড়া না দেওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হন নলিনী।
নিজের রিট পিটিশনে নলিনী অভিযোগ করেন, তাঁর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশের পর মোট ৩৭০০ মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত আসামিকে মুক্তি দিয়েছে তামিল নাড়ু সরকার। তিনি এও জানান যাঁদের খালাস করে দেওয়া হয়েছে তাঁরা ১০ বছর বা তার কম সময়ের জন্য জেল খেটেছেন।
আবেদনে তিনি লিখেছেন, "১৯৯৪ সালের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিতদের মুক্তি দেওয়ার যে প্রকল্প তার আওতায় আমার যে আবেদন, তা ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর মন্ত্রিপরিষদ মঞ্জুর করে এবং পরিষদ রাজ্যপালের কাছে আমাকে এবং এ মামলার আরও ৬ জন আসামিকে মুক্তি দেওয়ার পরামর্শ দেয়। কিন্তু ৬ মাস কেটে গেলেও রাজ্য সরকার সে সিদ্ধান্ত কার্যকর করেনি।"
নলিনীর মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশকে ২০০০ সালে তামিল নাড়ু সরকার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে হ্রাস করে। তৎকালীন এআইএডিএমকে সরকার রাজ্যপাল বনোয়ারীলাল পুরোহিতের কাছে মামলার সাতজন আসামি - মুরুগান, সান্থান, পেরারিভালান, জয়াকুমার, রবিচন্দ্রন, রবার্ট পায়াস এবং নলিনীকে মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করে। মুখ্যমন্ত্রী কে পালানিস্বামী বলেন তাঁর সরকার এই আসামিদের মুক্তির ব্যাপারে দায়বদ্ধ এবং তিনি আশা করেন রাজ্যপাল মন্ত্রিসভার সুপারিশ অনুযায়ী এঁদের ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ করবেন।
তামিল নাড়ুর শ্রীপেরুম্বুদুরে এক নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিতে গিয়ে ১৯৯১ সালের ২১ মে এলটিটিইর আত্মঘাতী জঙ্গির হাতে নিহত হন রাজীব গান্ধী।