গত সপ্তাহে দেশজুড়ে পয়গম্বর বিরোধী নূপুর শর্মার মন্তব্যের আঁচ পড়েছিল। জায়গায় জায়গায় বিক্ষোভ দানা বেঁধেছিল। রাঁচিতে হিংসাত্মক আন্দোলন হয়। পুলিশের গুলিতে দু'জনের মৃত্যও হয়েছিল। ৯ জুনের ওই ধ্বংসাত্মক বিক্ষোভে বহু সরকারি সম্পত্তি হানি হয়। সেদিনের বিক্ষোভে শামিল অভিযুক্তদের ছবি, নাম, ঠিকানা পোস্টার আকারে পুলিশ প্রশাসন রাস্তায় রাস্তায় টাঙিয়ে দেয়। এরপরই মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি তথা ঝাড়খণ্ডের স্বরাষ্ট্র সচিব পুলিশের এসএসপি-র কাছ থেকে পোস্টারকাণ্ডের ব্যাখ্যা চেয়েছেন। 'বেআইনি' কাজ সত্ত্বেও কেন ওই ধরণের পোস্টার দেওয়া হল তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
রাঁচির এসএসপি সুরেন্দ্র ঝাকে ঝাড়খণ্ডের স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব অরুণ এক্কার লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে যে, “১৪ জুন রাঁচি পুলিশ হিংসা বিক্ষোভে জড়িত অভিযুক্তদের পোস্টার লাগিয়েছিল, যাতে লোকেদের নাম এবং অন্যান্য তথ্য রয়েছে। এটি বেআইনি, ২০২০ সালের ৯ মার্চ তারিখের পিআইএল ৫৩২/২০২০-এ এলাহাদবাদ হাইকোর্টের আদেশ বিরোধী।" এসএসপি-র কাছ থেকে এ নিয়ে আগামী দুই দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে।
মঙ্গলবার, পুলিশ ১০ জুনের হিংসার জন্য অভিযুক্তদের পোস্টার প্রকাশ করেছে। তার কয়েক ঘন্টা পরেই সেগুলিকে সরানো হয় পুলিশের তরফে বলা হয়, "কিছু পরিবর্তন" করার জন্য পোস্টারগুলি সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অবশ্য কী পরিবর্তন করা হত তা নিয়ে পুলিশ মুখ খোলেনি।
এই কাজের জন্য রাজ্যপালকে দায়ী করেছে সোরেন প্রসান। সরকারের দাবি, রাজ্যপাল রমেশ বাইস রাজভবনে ডিজিপি নীরজ সিনহা এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের "তলব" করেছিল ওই বিক্ষোভের একদিন পর। এরপরই রাজ্যপাল সমস্ত প্রতিবাদকারীদের নাম এবং ঠিকানা তৈরি করতে এবং বিশিষ্ট স্থানে হোর্ডিংগুলিতে তাদের ছবি ও তথ্য সহ টাঙানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন।এর একদিন পরেই পোস্টারগুলি রাস্তার মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয় পুলিশের তরফে। রাজ্যের ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা - কংগ্রেস এবং ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা - এটিকে "কেন্দ্রের দ্বারা নির্দেশিত বাড়াবাড়ি" বলে অভিহিত করেছেন।
সোমবার রাজ্যের জনসংযোগ দফতরের জারি করা এক রিলিজ অনুসারে, রাজ্যপাল আধিকারিকদের বলেছিলেন: “সমস্ত প্রতিবাদকারী এবং যারা ধরা পড়েছে তাদের বিস্তারিত সন্ধান করুন, তাদের নাম/ঠিকানা সর্বজনীন করুন, তাদের ছবি প্রদর্শন করে হোর্ডিং তৈরি করুন। শহরের প্রধান স্থানগুলি যাতে জনসাধারণও তাদের সনাক্ত করতে পারে এবং পুলিশকে সাহায্য করতে পারে।"
সরকারি রিলিজ অনুসারে, রাজ্যপাল বাইস পুলিশের বড় কর্তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, 'যাঁরা এই ঘটনাগুলি সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বা এমনি গুজব ছড়াচ্ছে, আপনি কি তাদের চিহ্নিত করেছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিয়েছেন? এই ধরনের সমস্ত লোককে চিহ্নিত করে শাস্তি দেওয়া দরকার।'