প্রয়াত দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের চিফ অফ ন্যাশনাল ব্যুরো এবং ন্যাশনাল পলিটিক্যাল এডিটর রবীশ তিওয়ারি। শনিবার সকালে মৃত্যু হয় তাঁর। ২০২০-এর জুন থেকে ক্যান্সারে ভুগছিলেন রবীশ। মাত্র ৪০ বছর বয়সেই প্রয়াত রবীশ তিওয়ারি। বাড়িতে তাঁর বাবা-মা, স্ত্রী এক ভাই রয়েছেন।
প্রয়াত রবীশ দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সিনিয়র সাংবাদিকদের একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন। যে দলটি রাজ্য ও জাতীয়স্তরের একাধিক নির্বাচন কভার করেছিল। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শুরু করে দেশের কৌশলগত বিভিন্ন বিষয়, কূটনৈতিক একাধিক খবর দক্ষতার সঙ্গে সংগ্রহ ও তাঁর প্রকাশে রবীশের জুড়ি মেলা ভার। একজন প্রতিবেদক এবং সম্পাদক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গিয়েছেন রবীশ। গ্রামীণ ভারতের কৃষি, রাজনীতি এবং অতি সম্প্রতি উত্তর প্রদেশের প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও বহু জায়গা ঘুরে বেরিয়ে রিপোর্ট করেছেন রবীশ।
রবীশের অকাল প্রয়াণে শোকাহত গোটা এক্সপ্রেস পরিবার। এক্সপ্রেস গ্রুপের চেয়ারম্যান বিবেক গোয়েঙ্কা বলেন, ''রবীশ আমাদের পেশায় একটি বিরল, অনন্য কণ্ঠ ছিল। তিনি কখনও ইকো চেম্বারের আরাম খোঁজেননি। তিনি সবার কথা শুনেছিলেন। কারণ, তিনি জানতেন যে এটিই সর্বোত্তম এবং একমাত্র উপায়, যা দেশের রাজনৈতিক নাড়ি বুঝতে সাহায্য করবে। আমাদের পাঠক ও শ্রোতাদের কাছে বিষয়গুলির মসৃণ একটি ব্যাখ্যা দেওয়া সম্ভব হবে।'' তিনি আরও বলেন, ''তাঁকে হারিয়ে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। সাংবাদিক ও সম্পাদক হিসেবে তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রবীশ তাঁর কাজের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকবেন।''
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বম্বে-তে বি-টেক করতে যাওয়ার আগে রবীশ জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। ২০০৫-২০০৬ সালে ভারতের মাধ্যমিক শিক্ষায় সামাজিক ন্যায়বিচার সংক্রান্ত পড়াশোনার জন্য ছ'জন রোডস স্কলারের একজন হিসেবে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যান রবীশ।
রবীশ তিওয়ারির অকাল প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। টুইটে তিনি লিখেছেন, ''রবীশ তিওয়ারির জন্য সাংবাদিকতা ছিল একটি আবেগ। তিনি লাভজনক পেশার পরিবর্তে এটিই বেছে নিয়েছিলেন। রিপোর্টিং এবং তীক্ষ্ণ কথার জন্য তাঁর একটি ঈর্ষণীয় দক্ষতা ছিল। তাঁর আকস্মিক এবং মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর সংবাদ মাধ্যমের একটি স্বতন্ত্র কণ্ঠকে স্তব্ধ করে দিয়েছে। তাঁর পরিবার, বন্ধুবান্ধব এবং সহকর্মীদের প্রতি আমার সমবেদনা।''
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী টুইটে লিখেছেন, ''ভাগ্য খুব তাড়াতাড়ি রবীশ তিওয়ারিকে কেড়ে নিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল কেরিয়র শেষ হল। আমি তাঁর প্রতিবেদনগুলি পড়ে উপভোগ করতাম। পর্যায়ক্রমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করতাম। তিনি অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন এবং বিনয়ী ছিলেন। তাঁর পরিবার এবং বন্ধুদের সমবেদনা। ওম শান্তি।"
রবীশের প্রয়াণে শোকাহত কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। টুইটে শাহ লিখেছেন, ''রবীশ তিওয়ারির অকাল মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পেরে মর্মাহত ও বেদনাহত। তিনি ছিলেন একজন তরুণ, উজ্জ্বল ও পেশাদার সাংবাদিক। তাঁর পরিবার ও বন্ধুদের প্রতি আমার সমবেদনা রইল। ভগবান তাঁদের অপূরণীয় ক্ষতি সহ্য করার শক্তি দান করুন। ওম শান্তি।''
অন্যদিকে কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জয়রাম রমেশ টুইটে লিখেছেন, ''সেরা, জ্ঞানী সাংবাদিকদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। পরিবেশ মন্ত্রকের দায়িত্বে থাকাকালীন আমারও সমালোচনা করতেন। কিন্তু আমরা ছিলাম সবচেয়ে কাছের বন্ধু। মাত্র চারদিন আগেও আমরা একটি দীর্ঘ আলাপচারিতায় ব্যস্ত ছিলাম। তাঁর অকাল প্রয়াণে অত্যন্ত শোকাহত।''
Read full story in English