ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অভূতপূর্বভাবে পদত্যাগ করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর উর্জিত প্যাটেল। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, বর্তমান পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়াতে চান। এত বছর ধরে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের বিভিন্ন পদে কাজ করতে পেরে তিনি সম্মানিত বলেও বিবৃতিতে জানিয়েছেন প্যাটেল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সমস্ত স্তরের কর্মীদের সহযোগিতা এবং কঠোর পরিশ্রম ছাড়া ব্যাঙ্ক সাম্প্রতিককালে যে অবস্থান অর্জন করেছে তা সম্ভব হত না বলেও ওই বিবৃতিতে জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু পদত্যাগের আর কোনও কারণ দেখান নি।
উল্লেখ্য, প্যাটেল ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ২৪তম গভর্নর মনোনীত হন। তাঁর মেয়াদ ছিল তিন বছর। কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করায় পদ থেকে সরতে হয় প্যাটেলের পূর্বসূরি রঘুরাম রাজনকে। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছিল গত অক্টোবর থেকেই। কয়েকটি বিষয়ে সরকার ক্রমশ চাপ সৃষ্টি করছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ব্যাঙ্কে বাড়তি অর্থের জমা থাকা।
আরও পড়ুন: কেন্দ্র-রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তরজা ধামা চাপা দিতে বিবৃতি দিল অর্থ মন্ত্রক
আরবিআই-এর বর্তমান বাড়তি সঞ্চয়ের পরিমাণ ৩.৬ লক্ষ কোটি টাকা, যা কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্য অনুযায়ী উন্নয়নে ব্যয় করা উচিত। কিন্তু ব্যাঙ্কের বক্তব্য ছিল, আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা ভেবে সঞ্চয়ে হাত দেওয়া যাবে না। গতমাসে মুম্বইয়ে একটি দীর্ঘ মিটিংয়ের পর ব্যাঙ্কের বোর্ড সিদ্ধান্ত নেয়, বাড়তি অর্থের বিনিয়োগ খতিয়ে দেখতে একটি প্যানেল গঠন করা হবে, এবং ২৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ছোট ব্যবসাগুলিকে ঋণদানের প্রক্রিয়াটি ঢেলে সাজানো হবে।
আগামিকাল পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটের বহুপ্রতীক্ষিত ভোটগণনা। এক্সিট পোলের ফলাফলে হাড্ডাহাডি লড়াইয়ের ইঙ্গিত অস্বস্তিতে রেখেছে মোদী সরকারকে। ফল ঘোষণার চব্বিশ ঘন্টা আগে উৰ্জিত প্যাটেলের পদত্যাগ সেই অস্বস্তিতে নতুন মাত্রা যোগ করল। ভোটের ফল খারাপ হলে বিজেপি-র আর্থিক নীতির বিরুদ্ধে নতুন করে সুর চড়ানোর অন্যতম হাতিয়ার যে এই পদত্যাগ হতে যাচ্ছে, তাতে সন্দেহ নেই।