আপনি ভাল কাজ করছেন, কিন্তু…! 'মিষ্টি-সুরে যোগগুরু বাবা রামদেবকে ধমক' শীর্ষ আদালতের।
যোগগুরু রামদেব এবং পতঞ্জলি আয়ুর্বেদের এমডি বালকৃষ্ণ মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছেন, যে তারা বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের মামলায় ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। সিনিয়র অ্যাডভোকেট মুকুল রোহাতগি, সুপ্রিম কোর্টে তার পক্ষে উপস্থিত হয়ে বলেছেন যে তিনি আদালতে দেওয়া অঙ্গীকার লঙ্ঘনের জন্য নিঃশর্ত ভাবে ক্ষমা চাওয়া এবং এই বিষয়ে জনসাধারণের ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত তার মক্কেল বলেও দাবি করেন রামদেবের আইনজীবী। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার দুজনেই আদালতে হাজির হন।
বিচারপতি হিমা কোহলি ও বিচারপতি আহসানউদ্দিন আমানুল্লাহর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলছে। বিচারপতি হিমা কোহলি বলেন, আপনি অনেক সুনাম অর্জন করেছেন এবং লোকেরা আপনার কাজের প্রশংসা করে। আপনি যোগের ক্ষেত্রে অনেক কাজ করেছেন। বিচারপতি আমানুল্লাহ বলেন, 'আপনি কী ভাবে দাবি করেছিলেন যে রোগ সারে না তা আয়ুর্বেদের মাধ্য়মে নিরাময় হবে? এই ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি জনসাধারণকে দেওয়া যাবে না একথা জানার পরেও কী ভাবে আপনি অন্যান্য মেডিসিন সিস্টেমকে অপমান করলেন? আইন সকলের জন্য সমান।'
রামদেব এদিন বলেন, যে আমরা যা করেছি, আমাদের তখন করা উচিত ছিল না। পাশাপাশি তিনি বলেন, আদালতের মর্যাদা ও সুনাম ক্ষুন্ন করার কোনো উদ্দেশ্য তাঁর নেই। এ সময় বেঞ্চ বালকৃষ্ণকে বলেন, আপনি এতটা নির্দোষ নন যে আদালত আগের আদেশে কী বলেছিল তা আপনি জানেন না। সুপ্রিম কোর্ট ২৩ এপ্রিল শুনানি পিছিয়ে দিয়েছে।
বিচারপতি কোহলি তাঁকে বলেছিলেন যে মহর্ষি চরকের সময় থেকেই আয়ুর্বেদ চলে আসছে। আয়ুর্বেদকে প্রচার করার জন্য অন্যান্য ওষুধের পদ্ধতি সম্পর্কে খারাপ কথা বলা দরকার কিনা। জবাবে রামদেব বলেন, আদালতকে অসম্মান করা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল না। তিনি বলেছিলেন যে পতঞ্জলি আয়ুর্বেদকে একটি প্রমাণ-ভিত্তিক অনুশীলন করার জন্য অনেক কাজ করেছেন এবং তিনি অন্য কোনও চিকিৎসা পদ্ধতির সমালোচনা করতে চাননি। বিচারপতি কোহলি যোগ করেছেন যে নিজের প্রচারের জন্য অন্য সিস্টেমের বিরুদ্ধে খারাপ কথা বলার অধিকার কারও নেই। রামদেব সম্মত হন যে তার এমনটি বলা উচিত হয়নি এবং তিনি ভবিষ্যতে এই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন বলে আশ্বাস দেন।
বেঞ্চের একটি প্রশ্নের জবাবে, বালকৃষ্ণ বলেছিলেন যে তিনি রামদেবের সঙ্গে একমত এবং "অজ্ঞতাবশত" যা ঘটেছে তার জন্য তিনি দুঃখিত এবং "ভবিষ্যতে এটি পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন বলেও জানান তিনি"। আয়ুর্বেদের প্রচারের জন্য রামদেব যে কাজ করেছেন তার প্রশংসা করে বিচারপতি আমানতুল্লাহ বলেছেন যে তিনি অবশ্য অ্যালোপ্যাথিকে অপমান করতে পারেন না।