ভারতের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ রবিবার বলেছেন, বর্তমানে "কিছু লোকের বেপরোয়া এবং আগ্রাসী আচরণের" প্রেক্ষিতে বিচার ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা ফেরত আনা নিতান্ত প্রয়োজন। এই ধরনের আচরণ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে গগৈ বলেন, তিনি আশাবাদী যে দেশের আইনি প্রতিষ্ঠানগুলি এদের মোকাবিলা করতে সক্ষম হবে এবং "এই ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা এবং আগ্রাসী মনোভাবকে" পরাভূত করতে পারবে।
"আমি আশা রাখব যে এই ধরনের কিছু ঘটনা ব্যতিক্রম প্রমাণিত হবে, এবং আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলির শক্তিশালী ঐতিহ্য এবং মূল্যবোধ আমাদের অংশীদারদের সাহায্য করবে এই ধরনের উচ্ছৃঙ্খলতা এবং আগ্রাসী মনোভাবকে পরাভূত করতে," গৌহাটি হাইকোর্ট চত্বরে একটি অডিটোরিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার পর বলেন গগৈ, জানাচ্ছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
গগৈ আরও বলেন, অন্যান্য সরকারি দফতরের সঙ্গে আদালতের তফাৎ এই যে আদালতে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অংশীদার জড়ো হন আইনের রথ এগিয়ে নিয়ে যেতে, যদিও তাঁদের সকলেই হয়তো কোনও নির্দিষ্ট শ্রেণীতে আবদ্ধ নন।
"আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি যে সমস্ত বিচারক এবং আইনি আধিকারিকদের মনে রাখা উচিত, আমাদের জারি করা নির্দেশ এবং রায়ই ভিত তৈরি করে জনগণের আস্থা এবং ভরসার, যার জোরে বেঁচে রয়েছে আমাদের প্রতিষ্ঠান," গগৈকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে পিটিআই।
আরও পড়ুন: অযোধ্যা: মধ্যস্থতার ভাবনা এল কোথা থেকে, কেন ব্যর্থ হল সমঝোতার চেষ্টা
এবছরের ৭ নভেম্বর ভারতের প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নেবেন রঞ্জন গগৈ। ইতিমধ্যে তাঁর নেতৃত্বে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বেঞ্চ, যেমন অযোধ্যা মামলার বেঞ্চ এবং আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) সংক্রান্ত বেঞ্চ।
তাঁর ভাষণে গগৈ একথাও মনে করিয়ে দেন যে সারা দেশে এক হাজারেরও বেশি মামলা আজ ৫০ বছর ধরে বিচারাধীন রয়েছে, এবং ২৫ বছর ধরে বিচারাধীন রয়েছে দুই লক্ষেরও বেশি মামলা। "ভারতে ৫০ বছরের পুরনো মামলা রয়েছে হাজারের কিছু বেশি, এবং ২৫ বছরের পুরনো মামলা দু'লক্ষেরও বেশি," বলেন তিনি।
এই পরিসংখ্যানের নেপথ্যে রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে পর্যাপ্ত পরিমাণ বিচারপতির অভাব, যে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে গগৈ আবেদন জানিয়েছিলেন, বাড়ানো হোক সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের সংখ্যা। প্রতিক্রিয়া স্বরূপ ৩১ জুলাই একটি বিলের প্রস্তাব করেছে কেন্দ্রীয় সরকার, যার ফলে সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতির সংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ থেকে ৩৩ করা যাবে, প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে।