প্রয়াগরাজে বিক্ষোভকারীর বাড়ি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় আরও চাপে পড়ল উত্তরপ্রদেশ সরকার। আগেই আইনজ্ঞরা বলেছিলেন, যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন আদৌ কাজটা ঠিক করেনি। কিন্তু, সেকথা কানেই নেয়নি যোগী প্রশাসন। উলটে বুলডোজার দিয়ে বিক্ষোভকারীদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
নুপুর শর্মার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে দেশের অন্যান্য প্রান্তের মত বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছিল প্রয়াগরাজও। বিক্ষোভকারীরা বেশ কিছু জায়গায় অগ্নিসংযোগ করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি করেন বলেও অভিযোগ। পাশাপাশি, এলাকায় ভাঙচুর করার অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে। তারপরই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়ে দেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।
তাঁর নির্দেশমতো বিশাল পুলিশবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে প্রয়াগরাজে বিক্ষোভকারীদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেন প্রশাসনের লোকজন। সেই ঘটনাকে রীতিমতো ফলাও করে প্রচার করেছিলেন হিন্দুত্ববাদীরা। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত দেখা গেল যে আইনজ্ঞদের কথাই প্রায় অক্ষরে অক্ষরে ফলে গেল। বিক্ষোভকারীরা ইতিমধ্যে গোটা ঘটনায় আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন।
এভাবে বাড়ি ভাঙা যায় কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু, সেসব নিয়ে মামলার মধ্যেই উঠে এল আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। এ যেন অনেকটা কেঁচো খুঁড়তে কেউটে পাওয়ার মত। আর, তা হল- সরকারি নথি বলছে যে বাড়ি ভাঙা হয়েছে তা বিক্ষোভকারীদের না। বরং, বাড়ি রয়েছে বিক্ষোভকারী মহম্মদ জাভেদের স্ত্রী পরভিন ফতিমার নামে।
ইতিমধ্যেই মহম্মদ জাভেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার ভিত্তিতে আইনজ্ঞরা প্রশ্ন তুলেছিলেন, গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তির বাড়ি এভাবে গুঁড়িয়ে দেওয়া যায় কি না, তা নিয়ে। তাঁকে নোটিস দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়সীমা পর্যন্ত অপেক্ষা না-করেই বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বুলডোজার দিয়ে। কিন্তু, সরকারি নথি বলছে যে ওই বাড়ির মালকিন পরভিন ফতিমা।
আরও পড়ুন- ‘বড়ফুলের টাকা নিয়ে ছোট ফুলে ভোট দিন’, প্রচারে ঝড় তুললেন অভিষেক
তিনি প্রয়াগরাজের জল-কল বিভাগকে বিল দেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি, তিনি ৪,৫৭৮ টাকার জলের বিল পর্যন্ত প্রয়াগরাজ প্রশাসনকে দিয়েছেন। গত ২৮ জানুয়ারি, প্রয়াগরাজ নগর নিগম একটি সার্টিফিকেট দিয়েছিল। সেই সার্টিফিকেট অনুযায়ী, ৩৯সি/২এ/১ নম্বর বাড়ির মালকিন পরভিন ফতিমা। আর, তিনি ২০২০-২১ সালের বাড়ির করও জমা দিয়েছেন।
যোগী প্রশাসন অবশ্য দাবি করেছিল, যে বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, সেটা বেআইনি বাড়ি। কিন্তু, বেআইনি বাড়ি কীভাবে জলের কর দিতে পারে? কীভাবেই বা বাড়ির কর দিতে পারে? আর, সেই কর কীভাবেই বা নিতে পারে প্রশাসন? এই প্রশ্নই এখন তুলছেন আইনজ্ঞ মহল।
Read full story in English