মায়ের সঙ্গে শাবকের সম্পর্ক বেশ 'জটিল'। কিন্তু তাতে কি? কুনোর একমাত্র চিতা শাবকের অভিভাবকের সংখ্যার কিন্তু কোন অভাব নেই। ঠিক এক বছর আগে, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ নামিবিয়া এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ২০ টি চিতাকে কুনো জাতীয় উদ্যানে স্থানান্তরিত করা হয়। চলতি বছরের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ৬টি চিতার মৃত্যু হয়েছে। এখন এই মা ছাড়া চিতাকে সুস্থ ভাবে বাঁচিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ কুনো কর্তৃপক্ষের।
মায়ের ভালবাসা অধরা হতে পারে, কিন্তু কুনোর একমাত্র চিতা শাবকের পাশে রয়েছে পুরো বন্যপ্রাণী বিভাগ। ২৪ সেপ্টেম্বর চিতা শাবকটি ছয় মাসে পা দেবে। তার পাশে রয়েছে পশুচিকিত্সক থেকে বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা। "কুনোর ভবিষ্যত"কে বেঁচে থাকা নিশ্চিত করতে কোন খামতি রাখছেন না তারা। চিতা জ্বালা, আগে সিয়ায়া নামে পরিচিত ছিল। নামিবিয়া থেকে শেওপুর জেলার কেএনপিতে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে আনা হয়েছিল। এই বছরের মার্চের শেষ সপ্তাহে সে চারটি শাবকের জন্ম দেয়।
চিতার শাবককে বাঁচিয়ে রাখার চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বলতে গিয়ে চিতা স্টিয়ারিং কমিটির প্রধান ডাঃ রাজেশ গোপাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন। “আমরা বাচ্চাদের বেঁচে থাকা নিশ্চিত করার জন্য অবরাম কাজ করছি। স্বাস্থ্যকর এবং ভাল খাওয়া বড় ঘেরে স্থানান্তরিত করার পরিকল্পনা এবং এক বছরের মধ্যে নিজে থেকে শিকার করা শিখতে পারে তার প্রচেষ্টা করা, বাদ যাচ্ছে না কিছুই। তবে যেহেতু শাবকটি তার মায়ের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন তাই শিকার করতে হয়তো কিছুটা বেশি সময় লাগবে। দুই বছরের মধ্যে চিতা শাবক নিজেই শিকার করতে শিখবে”।
প্রবল গরমে চিতা শাবকের মধ্যে "ক্লান্তি এবং দুর্বলতার লক্ষণ দেখা দেয়। বন্যপ্রাণী কর্মকর্তারা ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য চিতা শাবককে মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন"। তারপর থেকে চিতা শাবককে বহুবার মায়ের কোলে ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও মা আর শাবককে গ্রহণ করে নি। বাচ্চাটি ডিহাইড্রেটেড ছিল এবং ওজন ছিল ১.৫ কেজি। এক সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠে সে। শাবকটি "তার মাকে দেখতে খুব উত্তেজিত" ছিল। কিন্তু
মা শাবকের থেকে নিজেকে দূরেই রেখেছিল নিজেকে জানিয়েছেন এক বনকর্তা। ৪ জুন, ফের মার সঙ্গে শাবকের মেলানোর একটা চেষ্টা করা হয়েছিল। মনিটরিং দল ক্যামেরায় নজর রেখেছিলেন। পরে যা ঘটেছিল তা দেখে তাতে সবাই হতবাক হয়ে গিয়েছিল। মা নিজের বাচ্চাটিকে আক্রমণ খুব আক্রমণাত্মক ভাবে আক্রমণ করে।বলেছেন কুনো বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) প্রকাশ কুমার।
শাবকটিকে তারপর থেকে ৩০ মিটার দূরে বেড়া দিয়ে আলাদা করে তার মায়ের পাশে একটি ছোট ঘেরে রাখা হয়েছে। সর্বক্ষণের প্রতিটি গতিবিধির ওপর নজর রাখা হচ্ছিল। ডিএফও কুমার বলেন, শাবকটিকে দিনে দুবার খাওয়ানো "অতিরিক্ত যত্নে" নেওয়া কিছুই বাদ যায় না। বর্তমানে শাবকের ওজন ৪ কেজির বেশি”।