মুকেশ আম্বানির কপালে বাড়ছে চিন্তার ভাঁজ। ট্রাই প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে গত ডিসেম্বরে এক ধাক্কায় রিলায়েন্স জিও-র গ্রাহক সংখ্যা অনেকটাই কমে গিয়েছে। মূলত হরিয়ানা ও পাঞ্জাবেই এই ধস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কৃষক আন্দোলনের জেরেই এই বিপত্তি বলে মনে করছে দেশের সর্ব বৃহৎ টেলিকম অপরেটর সংস্থা রিলায়েন্স জিও।
ভারতের টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি বা ট্রাই প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে গত নভেম্বরে পাঞ্জাবে জিও-র গ্রাহক সংখ্যা ছিল ১.৪০ কোটি। এক মাসের মধ্যে অর্থাৎ ডিসেম্বরের যা কমে হয়েছে ১.২৫ কোটি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরেও এই ধরণের প্রবণতা লক্ষ্য করা গিয়েছিল। অন্যদিকে, নভেম্বরের তুলনায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লক্ষ গ্রাহক কমেছে হরিয়ানাতে।
কেন এই প্রবণতা নজরে আসছে? এই বিষয়ে ই-মেইলে রিলায়েন্স জিও-র উত্তর চাওয়া হলেও তা মেলেনি। তবে, এর আগে সংস্থার তরফে দাবি করা হয়েছিল যে, কোভিড পরিস্থিতি ও প্রতিদ্বন্দ্বী টেলিকম সংস্থাগুলোর অপপ্রাচারের জেরেই জিও-র গ্রাহক সংখ্যা কমছে।
ট্রাইকে গত ১০ ডিসেম্বর লেখা চিঠিতে রিলায়েন্সের অভিযোগ ছিল, ভোডাফোন আইডিয়া লিমিটেড ও ভারতী এয়ারটেলের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীরা ক্রমাগত ভুয়ো প্রচার চালাচ্ছে। যার প্রভাব পড়েছে সংস্থার গ্রাহকদের মধ্যে। বহু সংখ্যক পোর্ট আউট রিকোয়েস্ট (সংযোগ বাতিলের আবেদন) ইতিমধ্যেই পেয়েছে তারা। ক্ষুব্ধ গ্রাহকরা জানিয়েছেন, পরিষেবা নিয়ে কোনও অভিযোগ নেই তাঁদের। কৃষি আইন সংক্রান্ত ওই অভিযোগের জন্যই তাঁরা জিও ছাড়তে চান। এই পরিস্থিতিতে তাদের অনুরোধ ছিল, ট্রাই যেন অবিলম্বে ওই সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করে। প্রসঙ্গত, এর আগে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরেও একই অভিযোগ জানিয়েছিল জিও।
যদিও মুকেশ আম্বানির সংস্থার এমন অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দেয় তাদের দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। এয়ারটেল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা এমন ভিত্তিহীন অভিযোগকে সম্পূর্ণ অস্বীকার করছে। ভোডাফোন আইডিয়াও অভিযোগটিকে ‘ভিত্তিহীন’ দাবি করে।
দিল্লি সীমানায় আন্দোলনরত কৃষকদের অধিকাংশই মনে করছেন নয়া কৃষি আইনের ফলে রিলায়েন্সের মত সংস্থাগুলো লাভবান হবে। এর আগে পাঞ্জাব, হরিয়ানায় জিও-র মোবাইল টাওয়ারে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে উত্তেজিত কৃষকদের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ, রিলায়েন্সের চুক্তি চাষের কারণেই কৃষি আইন তৈরি হয়েছে। পাল্টা মোবাইল টাওয়ার রক্ষায় আদালতের দ্বারস্থ হয় রিলায়েন্স গোষ্ঠী। সংস্থার তরফে আবেদনে জানানো হয়েছে এখন বা ভবিষ্যতে চুক্তি চাষের কোনও পরিকল্পনা তাদের নেই। রিলায়েন্স সবসময়ই কৃষকদের পণ্য বিক্রয়ে পূর্বাভাসের ভিত্তিতে ন্যায্য ও লাভজনক দামের পক্ষে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন