করোনা চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল রেমডেসিভির প্রয়োগের ছাড়পত্র দিল ভারতের সর্বোচ্চ ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা। কোভিড উপসর্গ রয়েছে এমন ব্যক্তি বা করোনা পজিটিভ সাবালোক ও শিশুর শরীরে এই ওষুধ প্রয়োগ করা যাবে। এমনটাই জানতে পেরেছে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
বিগত বহু বছর ধরেই রেমডেসিভির একাধিক ভাইরাস ঘটিত রোগের চিকিৎসায় প্রয়োগ করা হচ্ছে। কোভিড-১৯ ভাইরাসের প্রতিষেধক হিসাবেও এর কার্যকারীতা খতিয়ে দেখার কাজ চলছিল। অবশেষে করোনা চিকিৎসায় এই ওষুধ প্রয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছেন ভারতের ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল ডাঃ ভি জি সোমানি।
এই ওষুধ আমেরিকার বৃহৎ বায়োফার্মা কোম্পানি গাইলিড সায়েন্স তৈরি করে। তাদের থেকেই তা আমদানি করবে মুম্বইয়ের সংস্থা ক্লিনেরা সার্ভিসেস। সূত্র মারফত এমনটাই জানা গিয়েছে। করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভির প্রয়োগের ছাড়পত্র দেওয়া সংস্থা সেন্ট্রাল ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল ওরগানাইজেশন (সিডিএসসিও) জানিয়েছে, ইঞ্জেকশন নির্ভর এই ওষুধ সর্বাধিক ১০ দিন প্রয়োগযোগ্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যমন্ত্রকের এক আধিকারিক বলেছেন, 'কোন যুক্তিতে পাঁচ দিনেই বদলে এই ওষুধ ১০ দিন প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে? বেশি প্রয়োগ হলে মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা থাকবে। তাই অন্যরাষ্ট্রের তুলনায় এই ওষুধ প্রয়োগে এ দেশের কর্তৃপক্ষের আরও পোক্ত পদক্ষেপ করা উচিত।' তাঁর সংযোজন, 'রেমডেসিভির প্রয়োগের ছাড়পত্র আসলে জেনেরিক স্বেচ্ছাসেবী লাইসেন্সধারীদের পথ প্রশস্থ করল। তবে, পাঁচদিন এই ওষুধ প্রয়োগ করার কথা বলা হলে রোগীদের অর্থের সাশ্রয় হবে।'
এ প্রসঙ্গে ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থার কাছে জানতে চাওয়া হলেও কোনও জবাব মেলেনি। তবে, সংস্থা এই ওষুধের পরীক্ষামূলক যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে তাতে উল্লেখ, রেমডেসিভির যেসব করোনা আক্রান্তের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে তাঁদের ৬৫ শতাংশের শারীরিক অবস্থায় উন্নতি হয়েছে। যেসব করোনা সংক্রমিতের উপর এই ওষুধ প্রয়োগ হয়নি তাঁদের তুলনায় একাদশতম দিনে উন্নতি লক্ষ করা গিয়েছে।
আরও পড়ুন- কোভিড-১৯ এর ওষুধ হিসেবে রেমডেসিভির, সাফল্যের দাবি ও প্রশ্ন
আরেকটি সূত্র জানাচ্ছে, চিকিৎসকের সম্মতি ছাড়া কোনও রোগীর দেহে রেমডেসিভির প্রয়োগ উচিত নয়, এবং এটির প্রয়োগ সবসময় কোনও হাসপাতালে করাই ভালো। এছাড়া, এই ওষুধ প্রয়োগের ফলে মূত্র বা শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা কী হতে পারে বা হলে কী করণীয়- তার উল্লেখ থাকা প্রয়োজন।
সংস্থার রিস্ক ম্যানেজমেন্টের পরিকল্পনার অংশ হিসাবে, ওষুধের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ, প্রক্রিয়াকরণ এবং তা পাঠানো প্রক্রিয়াকে বাধ্যতামূলক করেছে সিডিএসসিও । এই রিপোর্ট এক মাসের মধ্যে জমা দিতে হবে। ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের অন্যান্য বিষয়সমূহও ন'মাসের মধ্যে জমা করতে হবে। যাঁদের উপর রেমডেসিভির প্রয়োগ করা হচ্ছে তাঁদের উপর কি নজরদারি হয়েছে তা প্রতি মাসে জানাতে হবে।
Read in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন