Advertisment

বিরাট ধৈর্যের প্রমাণ, উদ্ধারের পরই স্বাস্থ্যপরীক্ষা! এরপর আর কী কী?

সুড়ঙ্গ থেকে একে একে আটকে পড়া শ্রমিকরা বেরিয়ে আসতেই দেশ জুড়ে খুশির আমেজ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
uttarakhand rescue

শ্রমিকদের হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে অ্যাম্বুল্যান্স। (চিত্রাল খম্ভাটির এক্সপ্রেস ছবি)

সুড়ঙ্গ জয়! ৪০০ ঘন্টা শেষে স্বস্তির হাসি, কর্মকাণ্ডকে কুর্নিশ দেশবাসীর। মুক্তি পেয়ে আকাশ দেখে উচ্ছ্বসিত শ্রমিকরা। টানা ৪০০ ঘন্টা সুড়ঙ্গে আটকে থেকেও পরিবারের চিন্তায় দিন কেটেছে তাদের। শ্রমিকদের অদম্য জীবন শক্তিকে কুর্নিশ জানিয়েছেন গোটা দেশের মানুষ। উদ্ধার অভিযানে রাজ্য এবং কেন্দ্রের এক ডজন সংস্থা, বিশেষজ্ঞদের প্যানেল। সেনাবাহিনীর কাঁধে দায়িত্ব তুলে দেওয়াতেই অবশেষে আসে সাফল্য।

Advertisment

১৭ দিন ধরে চলা উদ্ধার অভিযানে কমপক্ষে ৬৫২ জন সরকারি কর্মচারী দিন রাত এক করে লড়াই চালয়ে গিয়েছেন। এর মধ্যে ১৮৯ জন পুলিশকর্মী। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে ১০৬ জন, ইন্দো তিব্বত বর্ডার পুলিশের ৭৭ জন, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৬২ জন, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ৩৯ জন, জল সংস্থা উত্তরকাশী থেকে ৪৬ জন, বিদ্যুৎ বিভাগের ৩২ জন এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন থেকে ৩৮ জন টানা ৪০০ ঘন্টা এই উদ্ধার অভিযানকে মনিটরিং করেছেন।

আরও পড়ুন: < Premium: সুড়ঙ্গ জয়ের ৪০০ ঘন্টা! ঐক্যবদ্ধ হার না মানা লড়াই, সাফল্যের এ কাহিনী চমকে দেবে >

সুড়ঙ্গ থেকে একে একে আটকে পড়া শ্রমিকরা বেরিয়ে আসতেই দেশ জুড়ে খুশির আমেজ। প্রধানমন্ত্রী সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমি সুড়ঙ্গে আটকে পড়া বন্ধুদের বলতে চাই, আপনাদের সাহস এবং ধৈর্য সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি আপনাদের সকলের মঙ্গল ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি। এটি অত্যন্ত তৃপ্তির বিষয় যে দীর্ঘ অপেক্ষার পর আমাদের এই বন্ধুরা এখন তাঁদের প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। এই চ্যালেঞ্জিং সময়ে এই সমস্ত পরিবার যে ধৈর্য এবং সাহস দেখিয়েছে, তা যথেষ্ট প্রশংসনীয়। আমি সকলের উদ্যমকেও প্রণাম জানাই। এই উদ্ধার অভিযানের সাথে জড়িত লোকেদের সাহসিকতা এবং দৃঢ়তা আমাদের শ্রমিক ভাইদের নতুন জীবন দিয়েছে। এই অভিযানের সাথে জড়িত প্রত্যেকেই মানবতা এবং দলগত কাজের বিচারে একটি আশ্চর্যজনক উদাহরণ তৈরি করেছেন।’ রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও আটকে পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য স্বস্তি এবং আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, উদ্ধারকারী দল একাধিক বিপত্তির মধ্যে কাজ করেছে। উদ্ধারকারীদের এই ১৭ দিনের শ্রম, এক বিরাট ‘ধৈর্যের প্রমাণ।’

দমবন্ধকর পরিবেশে আটকে ছিলেন টানা ৪০০ ঘন্টা। টানেল থেকে উদ্ধার হওয়া ৪১ শ্রমিককে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে ২৪ ঘন্টা মেডিকেল পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। যেখানে ৪১ শয্যার একটি আলাদা ইউনিট গড়ে তোলা হয়েছে। উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, 'চিকিৎসকদের সুপারিশের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে'। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "যেহেতু আটকে পড়া শ্রমিকরা সবেমাত্র অস্বাভাবিক পরিবেশ থেকে বেরিয়ে এসেছেন, তাদের আপাতত পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, এবং ডাক্তারদের সুপারিশের ভিত্তিতে, আমরা পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেব," । তিনি নিশ্চিত করেছেন যে শ্রমিকদের মধ্যে কারুর কোন শারীরিক সমস্যা দেখা দেয় নি। স্ট্রেচার থাকলেও শ্রমিকদের কেউই সেগুলি ব্যবহার করেনি।

ইতিমধ্যে উত্তরাখণ্ড সরকার উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের প্রত্যেককে ১ লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য'র কথা ঘোষণা করেছে। ধামি বলেছেন “আমাদের প্রতিটি কর্মী ভাইদের জন্য, আমরা উত্তরাখণ্ড সরকারের পক্ষ থেকে ১ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণা করেছি। আমরা বুধবার চেক হস্তান্তর করব। আমরা এনএইচআইডিসিএলকে তাদের ১৫ দিনের ছুটি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করব যাতে তারা তাদের বাড়িতে ফিরে যেতে পারে"। সূত্রের খবর ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশা সরকার রাজ্যর উদ্ধার হওয়া শ্রমিকদের বিমান পথে রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসার পরিকল্পনা করেছে। উদ্ধারকৃত শ্রমিকদের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ১৫ জন, উত্তরপ্রদেশের ৮ জন, ওড়িশা ও বিহারের ৫ জন, পশ্চিমবঙ্গের ৩ জন, উত্তরাখণ্ড ও অসমের ২ জন এবং হিমাচল প্রদেশের ১ জন রয়েছেন।

সারাদেশ আনা মেশিন সহ অভিযানের সঙ্গে জড়িত সমস্ত উদ্ধারকারী এবং বিশেষজ্ঞরাও ফিরতে শুরু করবেন। ধামীও নিশ্চিত করেছেন যে তারা উত্তরাখণ্ডের এই ধরনের সমস্ত টানেলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে এবং ভারত সরকার ইতিমধ্যে এই বিষয়ে একটি সিকিউরিটি অডিটের কথা ঘোষণা করেছে।

Uttarkashi Tunnel Collapse
Advertisment