Advertisment

ভাঙল বেড়া, ৭৪ বছর পর দেখা হল দুই ভাইয়ের, ভারতের সিক্কা খানকে ভিসা দিল পাকিস্তান

স্বাধীনতার পর বড় দাদাকে ফের চোখের দেখা দেখলেন সিক্কা। সীমান্তের উষ্ণতার আঁচ যেন নিমেশেই ঠান্ডা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
pakistan issues visa to indian sikka khan

বড় দাদা সাদিককে (বাঁদিকে) দেখেই জড়িয়ে ধরলেন ভাই সিক্কা খান (ডানদিকে)।

১৯৪৭ সাল, দু'টুকরো হল দেশ। সেই সঙ্গেই বাবা ও বড় দাদার সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল পাঞ্জাবের সিক্কা খানের। সেই থেকেই সিক্কার দু'চোখে ফের পুনর্মিলনের জন্য হাপিত্যেশ বাসনা। তবে, দু'দেশের সম্পর্কের ঘাত-প্রতিঘাতে আশা ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হয়েছে। শেষ পর্যন্ত এপারের সিক্কার সঙ্গে ওপারের সাদিকের দেখা হওয়ার সুযোগ সম্ভব করেছে কর্তারপুর করিডর। সেখানেই স্বাধীনতার পর বড় দাদাকে ফের চোখের দেখা দেখলেন সিক্কা। সীমান্তের উষ্ণতার আঁচ যেন নিমেশেই ঠান্ডা। এবার সিক্কা খানকে তাঁর দাদা ও অন্যান্য আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করার জন্য ভিসা দিল পাকিস্তান। শুক্রবারই নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাক হাইকমিশন এই ভিসা মঞ্জুর করেছে।

Advertisment

শুক্রবার পাকিস্তান হাইকমিশনের তরফে বলা হয়েছে, "এই দুই ভাইয়ের গল্পই প্রমাণ করে যে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সূচনা হওয়া কর্তারপুর সাহেব করিডোর কীভাবে দুই পারের মানুষদের একে অপরের কাছাকাছি নিয়ে আসছে।"

দিন কয়েক আগেই ওপারের পাঞ্জাবের দাদার সঙ্গে দেখা হয়েছে সিক্কার। এই মুহূর্তের জন্য জীবনভর অপেক্ষা করেছেন এপারের পাঞ্জাবের মানুষটা। এরপর আলাদা থাকার কথাই যেন বিষ পানের মতো, মনে করছেন সিক্কা। তাই গত মাসেই দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সিক্কা খান বলেছিলেন, 'আমি দাদার সঙ্গে দেখা করতে চাই, আমাকে ভিসা দেওয়া হোক।'

স্বাধীনতার সময় একরত্তি সিক্কা ও তাঁর মাকে রেখে বাবা চলে গিয়েছিলেন পাকিস্তানে। সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন বড় ছেলেকে। সেই শেষ দেখা। তারপর থেকে দুই ভাইয়ের দেখা হয়নি। মনে মনেই দাদাকে কল্পনা করে বেড়ে ওটা সিক্কার। ওপারে দাদা সাদিকেরও একই অবস্থা। মনে দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও বাস্তব অবস্থা সেই সুযোগ দেয়নি। তবে, রাখে হরি মারে কে। শেষ পর্যন্ত এখ ইউটিউবারের ভিডিও দেখে হল দাদা-ভাইয়ের মিলন।

পাকিস্তানের একজন ইউটিউবার নাসির ধিলো। পাঞ্জাব ভাগ, পাঞ্জাবের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি নিয়ে ভিডিও বানায় সে। সিক্কার দাদা সাদিক খানের কথা নাসিরই তাঁর ইউটিউব চ্যানেল 'পাঞ্জাবি লেহার'-এ তুলে ধরেছিল, যার সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ৫ লাখের উপর। সেখানেই ভাইয়ের সঙ্গে ফের দেখা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন প্রবীণ সাদিক। এই ভিডিও প্রকাশের পরদিনই এপারের সিক্কা খানের গ্রাম ফুলেওয়াল থেকে গ্রামীণ চিকিৎসক জাগসির সিং নাসিরকে ফোন করেন। জাগসির নাসিরকে জানান, সাদিক যে লোকটিকে খুঁজছেন সে তাঁর গ্রামের বাসিন্দা হাবিব ওরফে সিক্কা। সম্পূর্ণ বিষয়টির সত্য উদঘাটনে জটিলতা কাটে। কিন্তু তারপরও কাগজপত্র তৈরি জনিত নানা কাজে কেটে গেল দু'বছর। অবশ্য দেখা হল দুই ভাই সাদিক ও সিক্কার।

বড় ভাই সাদিক পাকিস্তানে বসেই দৃঢ়-বিশ্বাসী ছিলেন যে তাঁর ভাই ভারতে সিক্কা বেঁচে আছেন। নাসির বলছিলেন, 'উনি আমাকে ভাইয়ের সঙ্গে দেখা করানোর জন্য অনুরোধ করেন। ভাইয়ের বেঁচে থাকা নিয়ে তাঁর মনের বিশ্বাসই আমাকে এই কাজে আরও অণুপ্রাণিত করেছিল।'

Read in English

India pakistan Kartarpur Sahib Corridor
Advertisment