Advertisment

কোচবিহারের পাতালখোয়ায় গণ্ডার ফিরছে

রাজ্যে গণ্ডারের সংখ্যা বেশ কয়েকবছর ধরেই বাড়ছে। বনদফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী. ১৯৮৮ সালে জলদাপাড়ায় ১৪টি গণ্ডার ছিল। এখন জলদাপাড়া ও গরুমারা মিলিয়ে গণ্ডারের সংখ্যা ২২০।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
rhino

গণ্ডার ফিরছে কোচবিহারে

ভুগোলের হাত ধরে ইতিহাসের পুনারবৃত্তি হতে চলেছে। কোচবিহারের পাতালখোয়ায় গণ্ডার আসতে চলেছে আবার।  প্রায় পাঁচ যুগ, মানে ষাট বছর পর।

Advertisment

তোর্সা নদী নিজের গতিপথ পরিবর্তন করার পর পাতালখোয়ার গণ্ডারের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। রাজ্যের বনদফতরের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, গণ্ডারের বাসোপযোগী ভূমি ফের তৈরি হচ্ছে পাতালখোয়া এলাকায়। আর এ সুবাদে গরুমারা ও জলদাপাড়া অভয়ারণ্য থেকে পাতালখোয়ায় গণ্ডার নিয়ে আসছেন তাঁরা।

‘‘তোর্সার গতিপথ পরিবর্তিত হওয়ার পরে গণ্ডাররা আর এ জায়গায় টিঁকতে পারে নি। উত্তরবঙ্গের নদীরা ২৫ বছর অন্তর গতিপথ বদলায়। এখন তোর্সা আবার দিক বদলাচ্ছে এবং তার জেরে এই এলাকায় নতুন তৃণভূমি তৈরি হচ্ছে, যা আবার গণ্ডারের স্বাভাবিক বাসভূমি।’’ বলছেন বন দফতরের কর্তা রবিকান্ত সিনহা।

এ রাজ্যে গণ্ডারের সংখ্যা বেশ কয়েকবছর ধরেই বাড়ছে। বনদফতরের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী. ১৯৮৮ সালে জলদাপাড়ায় ১৪টি গণ্ডার ছিল। এখন জলদাপাড়া ও গরুমারা মিলিয়ে গণ্ডারের সংখ্যা ২২০। শুরুতে পাতালখোয়ায় পাঁচ ছ-টি গণ্ডার নিয়ে যাওয়া হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রবিকান্ত সিনহা। ‘‘স্থানীয় মানুষের মত না থাকলে এ ধরনের প্রকল্প সম্ভবই নয়, কারণ তাঁদের ছাড়া চোরাশিকারীদের ঠেকানো প্রায় অসম্ভব।’’  ওই এলাকার জরিপের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে এবং বেড়া দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। যেহেতু হাতি যেমন লোকালয়ে চলে যায়, গণ্ডাররা একেবারেই তেমন নয়। মানুষের বসতি এলাকা তারা সাধারণ ভাবে এড়িয়ে চলে। ফলে হাতি-মানুষ সংঘর্ষের মত ঘটনার সম্ভাবনাও এক্ষেত্রে ক্ষীণ বলেই মনে করছেন তিনি।

২০১৭ সালে উত্তরবঙ্গে অন্তত তিনটি গণ্ডারের চোরাশিকারের ঘটনা ঘটেছে। শেষ ঘটনা ছিল ডিসেম্বরে, জলদাপাড়ায়। বনদফতরের কর্তাদের কাছে চোরাশিকারের আগাম খবর থাকা সত্ত্বেও সে হামলা ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিলেন তাঁরা। তবে, ঘটনার পাঁচ ঘন্টার মধ্যেই ৭ জনকে আটক করা হয়েছিল। এদের মধ্যে পাঁচজনকে পাকড়াও করা হয়েছিল এ রাজ্যে থেকেই। বাকি দুজনের একজন ধরা পড়ে অরুণাচলে, অন্যজনকে ধরা হয়েছিল ভূটান থেকে। উদ্ধার হয়েছিস গণ্ডারে একটি খড়্গও। বনদফতরের কর্তা জনিয়েছেন, গণ্ডারের খড়্গ সাধারণভাবে সাধারণভাবে চিন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় পাচার হয়ে থাকে। আন্তর্জাতিক বাজারে একটি গণ্ডারের খড়্গের দাম ১০ লক্ষটাকা পর্যন্ত হতে পারে।

তবে বাংলার পরিস্থিতি আসমের মতো নয় বলে দাবি করেছেন রবিকান্ত সিনহা। ‘‘এখানে বছরে গড়ে একটি চোরাশিকারের ঘটনা ঘটে, যেখানে আসামে ঘটে ১০ থেকে ১৫টি। কোচবিহারেও চোরাশিকার ঠেকাতে আগাম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে গণ্ডারের বাসভূমি যত ছড়িয়ে পড়ে, ততই ভাল’’, মন্তব্য রবিকান্তের।

wildlife
Advertisment