দেশে একের পর এক মামলার পাহাড় জমছে। কিন্তু, বিচারপতির সংখ্যা কম। কলেজিয়ামের বিরুদ্ধে সুর চড়ানোর সুর চড়ানোর সময় তিনি একথা বলেছিলেন। ফের একই কথা শোনা গেল কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর মুখে। তিনি জানিয়েছেন, এই বকেয়া মামলার জন্য বিচারপতিরা দায়ী নন। বরং, যত দোষ ব্যবস্থার। তাকে উন্নত করার চেষ্টা চলছে। উদয়পুরের মোহনলাল সুখদিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় ল কমিশন আয়োজিত 'ভারতে টেকসই উন্নয়ন: বিবর্তন এবং আইনি দৃষ্টিকোণ' শীর্ষক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময় রিজিজু এই কথা বলেন।
তাঁর এই বক্তব্য যে মূলত কলেজিয়ামের বিরুদ্ধে, প্রথমটা এমনই মনে করেছিলেন উপস্থিত অনেকেই। কারণ, বেশ কিছুদিন ধরেই বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কলেজিয়াম ব্যবস্থা অবসানের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে। যা সুপ্রিম কোর্টের বাধায় আটকে রয়েছে। রিজিজু কি সেই নিয়ে অনুষ্ঠানে কিছু বলবেন? এই ব্যাপারে যখন উপস্থিত সকলের কৌতূহল তুঙ্গে, তা নিরসন করেছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী নিজেই। তাঁর দাওয়াই, মামলার সংখ্যা কমানোর জন্য প্রয়োজন অপ্রয়োজনীয় এবং অপ্রচলিত আইন বাতিল করা। আদালতের কাঠামো উন্নত করা। প্রযুক্তির সঙ্গে আদালতকে সাজানো। রিজিজু বলেন, 'দেশে যে ধরনের ব্যবস্থা থাকা উচিত, আমরা সেদিকেই এগিয়ে যাচ্ছি।'
মন্ত্রী জানান, বর্তমানে দেশে বকেয়া মামলার সংখ্যা ৪ কোটি ৯০ লক্ষ। তিনি বলেন, 'কোনও দেশে বা সমাজে এতগুলো মামলা বিচারাধীন থাকা ভালো কথা না। এর অবশ্য বেশ কিছু কারণ আছে। বিচারকদেরও অবস্থাও বেশ খারাপ। একজন বিচারককে দিনে ৫০ থেকে ৬০টি মামলা পরিচালনা করতে হয়। তাঁরা অনেক মামলার নিষ্পত্তি করলেও প্রতিদিন যে সংখ্যক মামলা তাঁদের কাছে আসে, তা নিষ্পত্তিরও দ্বিগুণ।'
আরও পড়ুন- শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানকে চিনের ঋণদান নিয়ে উদ্বিগ্ন আমেরিকা, ভারতে আসছেন ব্লিঙ্কেন
রিজিজু বলেন, 'সাধারণ মানুষ জিজ্ঞাসা করেন, কেন আদালতে এত মামলা ঝুলে আছে? কিন্তু, একজন বিচারপতি ঠিক কতটা কাজ করেন, তা সাধারণ মানুষের জানা নেই। এটা বিচারপতির দোষ নয়, ব্যবস্থার দোষ।' তিনি বলেন, 'ঝুলে থাকা মামলার সংখ্যা কমানোর একটি প্রধান উপায় হল প্রযুক্তির ব্যবহার। গোটা দেশে আদালতকে কাগজবিহীন করার জন্য প্রযুক্তি দিয়ে সাজানো হচ্ছে। আমরা অর্ধেক দূর পর্যন্ত এসেছি। এখন এটিকে চূড়ান্ত রূপ দিচ্ছি। উচ্চ আদালত, নিম্ন আদালত এবং ট্রাইব্যুনালগুলোকে প্রযুক্তিতে সুসজ্জিত করা হচ্ছে।'