হনুমান জয়ন্তীর দিন হরিদ্বারের কাছে দাদা জালালপুর গ্রামে হনুমান জয়ন্তীর মিছিলে পাথরবৃষ্টির অভিযোগ উঠেছিল। পালটা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল বেশ কিছু গাড়ি। সেই সময় পুলিশের একতরফা গ্রেফতারির অভিযোগ করেছিলেন দাদা জালালপুর গ্রামের বাসিন্দারা। তারপর বেশ কয়েকটা দিন কেটে গিয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমশ শান্ত হচ্ছে। কিন্তু, তা যেন শান্ত হতে দিতে চাইছেন না কেউ কেউ। সেজন্য এবার রুরকিতে মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়েছিল। কিন্তু, আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হতে দিতে নারাজ প্রশাসন।
কড়া নির্দেশে মহাপঞ্চায়েত আয়োজনের খবর পেয়েই রুরকির গ্রাম ঘিরে ফেলল বিশাল সংখ্যক পুলিশবাহিনী। মহাপঞ্চায়েতের উদ্যোক্তা স্বামী আনন্দস্বরূপকেও গৃহবন্দি করা হয়েছে। গ্রামে তাঁর অনুগতদেরও করা হয়েছে গৃহবন্দি। গ্রামের আশপাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা। সুপ্রিম কোর্ট মঙ্গলবারই উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যে যেন কোনও 'অপ্রীতিকর পরিস্থিতি' তৈরি না-হয়। আর, কেউ যেন কোনও 'উসকানিমূলক কথাবার্তা' না-বলেন। এই নির্দেশের পরই গোটা রুরকি এলাকায় ব্যাপক পুলিশ নজরদারির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- ইউক্রেন ইস্যুতে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করতে ইউরোপ সফরে মোদী
হরিদ্বারের অতিরিক্ত জেলাশাসক বিএল শাহ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আছে। কোনও মহাপঞ্চায়েত আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। শাহ বলেন, ' যে গ্রামে মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়েছিল, সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। গোটা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আগাম সতর্কতামূলক হিসেবে ছ'জন ব্যক্তিকে পুলিশ হেফাজতে নিয়েছে। গ্রামে যাতে কেউ প্রবেশ করতে না-পারে, তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।'
১৬ এপ্রিল হনুমান জয়ন্তীর সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছিলেন। গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৪ জনকে। যারা প্রত্যেকেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের। শেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী, রুরকির দীনেশানন্দজি মহারাজের আশ্রম থেকেও কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। মহাপঞ্চায়েতের উদ্যোক্তারা অবশ্য আগে জানিয়েছিলেন, তাঁরা কারও ওপর হামলার জন্য এর আয়োজন করছেন না। পুলিশ, ১৬ এপ্রিলের ঘটনায় মূল দোষীদের গ্রেফতার করেনি। তার প্রতিবাদে পুলিশকে চাপ দেওয়ার জন্য এই মহাপঞ্চায়েত ডাকা হয়েছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রুরকি থেকে দাদা জালালপুর যাওয়ার রাস্তা দেখলে মনে হবে যেন কোনও সেনাছাউনি। এতটাই নিরাপত্তার কড়াকড়ি করা হয়েছে। হিন্দুত্ববাদীরা এখানে হিন্দুদের রক্ষার নামে 'কালী সেনা' নামে সংগঠন তৈরি করেছেন। পরিস্থিতি দেখে এই 'কালী সেনা'র সদস্যদের শান্ত থাকার অনুরোধ করেছেন উদ্যোক্তারা।
Read story in English