Advertisment

২ কেজি মাংস কিনলে ৫০০ গ্রাম ফ্রি, পচা মাংসের কারবারে ইউএসপি কওসরের

ভাগারের মাংসের সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছিল কওসরের পচা মুরগির মাংসের কারবার। ২ কেজি মাংস কিনলেই ফ্রি ৫০০ গ্রাম। এতেই বেড়েছিল এই বেআইনি কারবারের রমরমা।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kausarRAO_1616-001

এখান থেকেই চলত কওসরের পচা মুরগির মাংসের ব্যবসা

জয়প্রকাশ দাস

Advertisment

২ কেজি মুরগির মাংস কিনলে ফ্রি ৫০০ গ্রাম। আর ৫০০ গ্রাম মাংস কিনলে নিখরচায় মিলবে আরও ১০০ গ্রাম মাংস। এটাই ছিল কওসর আলির পচা মাংসের কারবারের ইউএসপি। হোটেল, রেস্তোরাঁয় বসেই পাওয়া যেত ঢালি চিকেন ফার্মের মাংস। এভাবেই গড়ে উঠেছিল কওসরের বেআইনি ব্য়বসার বাড়বাড়ন্ত। তার এই কারবারের কোনও লাইসেন্সও ছিল না। পচা মাংস কাণ্ডের তদন্তে উঠে এসেছে এমনই সব চাঞ্চল্য়কর তথ্য়।  ধৃত কওসরকে জেরা করে আরও তথ্য় মিলতে পার বলে মনে করছে পুলিশ।

শেষমেষ পচা মাংস কাণ্ডের চাঁই কওসর আলি ঢালি ধরা পড়ল পুলিশের জালে। নিউটাউন ও দক্ষিণদাঁড়ি এলাকার দুটি চিকেন সেন্টারে এই কারবার চলত একেবারে রমরমিয়ে। ভাগাড়কাণ্ড চাউড় হতেই  মানুষের মধ্যে মাংস  নিয়ে সন্দেহ দানা বাঁধতে থাকে। ওই সময়ে দমদম এয়ারপোর্ট আড়াই নম্বর এলাকার পুলিন এভিনিউতে দুর্গন্ধ পান স্থানীয় বাসিন্দারা। দুই ব্য়ক্তিকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ওই দুজনের কাছ থেকে মেলে পচা মুরগির মাংস। তাদের গ্রেফতার করতেই ঝুলি থেকে বেড়িয়ে আসে বেড়াল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদেই উঠে আসে নিউটাউন-রাজারহাটের ঢালি চিকেন সেন্টারের নাম। যার মাথা কওসর আলি ঢালি।

এরপর নিউটাউন-রাজারহাট সিটি সেন্টারের কাছে ঢালি চিকেন ফার্মে হানা দেয় পুলিশ। ৯টি ফ্রিজার থেকে ১ কুইন্টাল মাংস উদ্ধার করে। পুলিশ তখন ওই ফার্মের নথিপত্র, কম্পিউটারের হার্ড ডিস্ক উদ্ধার করে। এরপর নিউটাউনের সূত্র ধরে পুলিশ তল্লাশি চালায় দক্ষিণদাঁড়ি এলাকার ১৭ নং রেল গেটের কাছে ঢালি চিকেন সেন্টারে। সেখানেও কেজি কেজি পচা মাংস উদ্ধার হয়। তদন্তকারীদের চোখ কপালে ওঠে। কওসরের ৫ সাকরেদকে জিজ্ঞাসাবাদ করে তদন্তকারীরা জানতে পারেন এই কারবার করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছে কওসর। তার লেকটাউনের ফ্ল্যাটেও হানা দিয়েছিল পুলিশ। বসিরহাটের গ্রামের বাড়িতেও তার হদিশ মেলেনি। তদন্তকারীদের অনুমান,  বেনামে অনেক ফ্ল্যাট ও জমি কিনে রেখেছে কওসর।

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, কওসরের এই বেআইনি কারবার স্থানীয়দের মধ্য়ে যাতে কেউ টের না পায়, সে জন্য় বসিরহাট থেকে লোক নিয়ে এসেছিল। তারাই এই পচা মাংসের কারবারের তদারকি করত। এই সব লোকজন অত্যন্ত বিশ্বস্ত হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সব কিছু গোপন রেখে ব্যবসা চালানো সম্ভব হয়েছিল।

ভাগাড় কাণ্ডের জেরেই ফাঁস হয়ে গেছে কওসরের পচা মাংসের কারবার। বাঁচার চেষ্টার অবশ্য কসুর করেনি সে। তার মাংসের দোকান সিল করার পর তথ্য় লোপাটের চেষ্টা চালিয়েছিল তার লোকজন। ভাঙা হয়েছিল ফ্রিজারের তালা।

এখন পুলিশ খতিয়ে দেখছে কওসরের এই ভয়ংকর কারবারের পিছনে কোনও প্রভাবশালীর হাত রয়েছে কি না।

rotten meat
Advertisment