ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ড নিয়ে এবার তৎপর হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাংসকাণ্ডের তদন্তের জন্য হাই পাওয়ার কমিটি গঠন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার নবান্নে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে একথা জানান তিনি। মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে এই কমিটি গঠন করা হচ্ছে বলে এদিন জানান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানুষ ভয়ে মাংস খাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রচুর মানুষ খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন।’’ যাতে সাধারণ মানুষ নির্ভয়ে সবকিছু খেতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে ওই কমিটি সমস্ত দিক খতিয়ে দেখবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। পচা মাংসকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন যে, ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ডে ইতিমধ্যেই কয়েকজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন, পচা মাংসকাণ্ডে জালে আরও ২, এন্টালি থেকে আটক করল কলকাতা পুলিশ
এদিকে পচা মাংসকাণ্ডে পুলিশের জালে ধরা পড়ল আরও দুজন। সোমবার এন্টালি থেকে এই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে কলকাতা পুলিশের দল। বেনিয়াপুকুর এলাকায় একটি দোকানে মরা মুরগির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে, গোপন সূত্রে এ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে হানা দেয় পুলিশ। পচা মাংসকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মহম্মদ জুমান ও মহম্মদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক এই দুই ব্যক্তিই দোকানটি চালাত বলে জানা গেছে। ওই দোকান থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে গবেষণাগারে। এ ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার তরফ থেকেও পুলিশকে জানানো হয়েছিল বলে খবর।
এর আগে গত বুধবার সন্ধ্যায় গড়িয়া স্টেশন থেকে বিশ্বনাথ ঘোড়াই নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫২ বছর বয়সী ওই প্রৌঢ় পচা মাংস কারবারের অন্যতম অভিযুক্ত বলে জানা গেছে। বাজার ও রেস্তোরাঁয় পচা মাংস সরবরাহ করার পিছনে বিশ্বনাথের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন, পচা মাংস কাণ্ড- আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে নিয়ে যাওয়া হত উদ্বৃত্ত পশুখাদ্য
ভাগাড়ে পচা মাংস কারবারের জাল অনেক গভীরে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। এ ঘটনায় পুরকর্মীদের একাংশের জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। এদিকে পচা মাংসকাণ্ডে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে উদ্বৃত্ত পশুমাংস নিয়ে যাওয়া হত নিয়মিত। চিড়িয়াখানায় হানা দিয়ে এ তথ্য জানতে পেরেছেন পুরকর্মীরা। সম্প্রতি ভাগাড়ের পশু মাংস নিয়ে যে সব তথ্য সামনে আসছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আগাম খবর না দিয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পরিদর্শনে যান পুরকর্মীরা। পরিদর্শনকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।