পচা মাংসকাণ্ডে পুলিশের জালে ধরা পড়ল আরও দুজন। সোমবার এন্টালি থেকে এই দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে কলকাতা পুলিশের দল। বেনিয়াপুকুর এলাকায় একটি দোকানে মরা মুরগির মাংস বিক্রি করা হচ্ছে, গোপন সূত্রে এ খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে হানা দেয় পুলিশ। এবং তারপরই পচা মাংসকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে মহম্মদ জুমান ও মহম্মদ মুন্নাকে আটক করেছে পুলিশ। আটক এই দুই ব্যক্তিই দোকানটি চালাত বলে জানা গেছে। ওই দোকান থেকে উদ্ধার হওয়া মাংস পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে গবেষনাগারে। এ ব্যাপারে কলকাতা পুরসভার তরফ থেকেও পুলিশকে জানানো হয়েছিল বলে খবর।
অন্যদিকে ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ডে বাজেয়াপ্ত মাংসগুলির মান যাচাইয়ের জন্য সেগুলি ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টে কী মেলে, সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে ডায়মন্ড হারবার পুলিশ। ফরেন্সিক রিপোর্ট পেলেই এ ঘটনা সম্পর্কে আরও সুস্পষ্ট হওয়া যাবে বলেই মনে করছেন ডায়মন্ড হারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও। এ ঘটনায় ধৃতদের জোরদার জেরা করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
আরও পড়ুন, পচা মাংস কাণ্ড- আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে নিয়ে যাওয়া হত উদ্বৃত্ত পশুখাদ্য
এদিকে পচা মাংসকাণ্ডে আরও এক চাঞ্চল্যকর তথ্য মিলেছে। মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আলিপুর চিড়িয়াখানা থেকে উদ্বৃত্ত পশুমাংস নিয়ে যাওয়া হত নিয়মিত। চিড়িয়াখানায় হানা দিয়ে এ তথ্য জানতে পেরেছেন পুরকর্মীরা। সম্প্রতি ভাগাড়ের পশু মাংস নিয়ে যে সব তথ্য সামনে আসছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে আগাম খবর না দিয়ে আলিপুর চিড়িয়াখানায় পরিদর্শনে যান পুরকর্মীরা। পরিদর্শনকারী দলের নেতৃত্বে ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ।
আরও পড়ুন, ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ডে গ্রেফতার আরও ১, ধৃত বেড়ে ১১
অতীন ঘোষ জানিয়েছেন, ‘‘চিড়িয়াখানায় প্রতিদিন এক একটি মাংশাসী পশুর জন্য সাত থেকে আট কিলোগ্রাম মাংস লাগে। তবে কিছু পরিমাণ মাংস প্রতিদিনই বেঁচে যায়। সল্টলেকের এক বাসিন্দা সেগুলি মাছকে খাওয়ার জন্য নিয়ে যেতেন। আমরা ওই ব্যক্তির সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করেছি। তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন, ভাগাড়ে পচা মাংসকাণ্ডে এবার পুলিশের নজরে একটি পোলট্রি ফার্মের মালিক
অন্যদিকে বুধবার সন্ধ্যায় গড়িয়া স্টেশন থেকে বিশ্বনাথ ঘড়ুই নামে আরও একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ৫২ বছর বয়সী ওই প্রৌঢ় পচা মাংস কারবারের অন্যতম অভিযুক্ত বলে জানা গেছে। বাজার ও রেস্তোরাঁয় পচা মাংস সরবরাহ করার পিছনে বিশ্বনাথের হাত রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। গত বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বনাথকে বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট) গ্রেফতার করে বলে জানিয়েছেন ডায়মন্ডহারবার পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।