Advertisment

ট্রেনে গুলি কাণ্ডে নয়া মোড়, মুসলিম মহিলাকে ‘জয় মাতা দি’ বলতে বাধ্য করেন অভিযুক্ত RPF জওয়ান

সূত্রের খবর এই গোটা ঘটনা ট্রেনের সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mumbai, mumbai news, indian express news

চলন্ত ট্রেনে গুলি কাণ্ডে নয়া মোড়। মুসলিম মহিলাকে জোর করে ‘জয় মাতা দি’ বলতে বাধ্য করেছিলেন অভিযুক্ত আরপিএফ কনস্টেবল। তদন্তে উঠে এসেছে এমনই বিস্ফোরক তত্ত্ব। তদন্ত অনুসারে জানা গিয়েছে বি-৩-এ কোচের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার সময় চেতন সিং এক মুসলিম মহিলাকে টার্গেট করেন। তাঁকে জোর করে ‘জয় মাতা দি’ বলতে বাধ্য করেন ওই জওয়ান।

Advertisment

সূত্রের খবর এই গোটা ঘটনা ট্রেনের সিসিটিভি ক্যামেরাতেও ধরা পড়েছে। পাশাপাশি ওই মহিলা গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি)র কাছে এই মর্মে 'গোপন জবানবন্দীও' দিয়েছেন। পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, মহিলাটি তখন তার বন্দুকটি দূরে ঠেলে দিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করেন, "আপনি কে"?

ট্রেনে ধর্মীয় পরিচয় জেনে হত্যা! চলন্ত ট্রেনে গুলি কাণ্ডে RPF-এর বিরুদ্ধে ভয়ঙ্কর অভিযোগ। মুসলিম মহিলাকে জোর করে ‘জয় মাতা দি’ বলতে বাধ্য করেছিলেন অভিযুক্ত আরপিএফ জওয়ান। গুলি করে চারজনকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত আরপিএফ কনস্টেবল চেতন সিংয়ের মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। রেল সূত্রে এমনটাই খবর। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় যে সাম্প্রদায়িক কারণকে সামনে আনা হচ্ছে তা উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, শুধু মুসলিমদের খুন করেছেন চেতন, এমনটা নয়। তিনি তাঁর সিনিয়র আধিকারিককেও খুন করেছেন। তিনি হিন্দু। সেক্ষেত্রে এখানে ওই সাম্প্রদায়িক তত্ত্ব খাড়া করাটা ঠিক নয়। কিন্তু এই ঘটনা সামনে আসতেই রেলের খাঁড়া করা তত্ত্বের বিপরীত চিত্র ফুটে উঠেছে।

চলন্ত ট্রেনে পরপর গুলি….! কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এক সিনিয়ার আরপিএফ আধিকারিক সহ চার যাত্রী। এফআইআর অনুসারে, অভিযুক্ত কনস্টেবল চেতন সিং রিপোর্ট করেছিলেন যে তিনি অসুস্থ ছিলেন যার কারণে তিনি তাঁর শিফট শেষ হওয়ার কয়েক ঘন্টা আগে ডিউটি থেকে অব্যাহতি পেতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাঁর সিনিয়ররা তাঁর দায়িত্ব শেষ করার জন্য জোর দেওয়ায়, এটি তাকে উত্তেজিত করে যার ফলে সে মীনাকে গুলি করে। এবং দ্রুতগামী ট্রেনে আরও তিনজন যাত্রীকে গুলি করেন।

অন্য আরপিএফ কনস্টেবল অময় আচার্যের বরিভলি জিআরপি-র বিবৃতি অনুসারে, “সিং, মীনা এবং আরও তিনজন টিকিট চেকার সোমবার ভোরবেলা প্যান্ট্রি কোচে আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। মীনা আমাকে বলেছিলেন যে সিং অসুস্থ, তারপরে আমি তাঁকে ছুঁয়ে দেখেছিলাম কিন্তু আমি বুঝতে পারিনি তার জ্বর হয়েছে কিনা।

সিং তাড়াতাড়ি ডিউটি থেকে অব্যাহতি এবং ভালসাড় রেলওয়ে স্টেশনে নামানোর জন্য জোর দিয়েছিলেন। যাই হোক, মীনা তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করছিল যে তাঁরা দুই বা তিন ঘন্টার মধ্যে মুম্বই পৌঁছে যাবে এবং তাঁর দায়িত্ব শেষ করার জন্য জোর দিয়েছিল এবং সিং তাঁর সঙ্গে একমত না হওয়ায়, মীনা মুম্বই সেন্ট্রাল কন্ট্রোল রুমকে জানান যিনি পরিবর্তে তাঁকে বোঝাতে বলেছিলেন। এএসআই এমনকি তাঁদের সহকারী নিরাপত্তা কমিশনার সুজিত কুমারকে ফোন করেছিল এবং এমনকি তিনি তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সিং কারও কথা শুনতে প্রস্তুত ছিলেন না"।

জয়পুর-মুম্বই সেন্ট্রাল সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসে রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) কনস্টেবল চেতন সিং (৩৩) এর হাতে নিহত চতুর্থ ব্যক্তির নাম সৈয়দ সাইফুল্লাহ (৪৩), হায়দ্রাবাদের বাসিন্দা। অন্য তিনজন সাব-ইন্সপেক্টর টিকারাম মীনা (৫৭) বিহারের মধুবনীর আসগর আব্বাস আলী (৪৮); এবং আব্দুল কাদের মহম্মদ হোসেন (৬৪) মহারাষ্ট্রের পালঘরের বাসিন্দা।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে সাইফুল্লাহ আজমির শরীফ থেকে মুম্বই হয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তার একটি মোবাইল রিপিয়ারিংয়ের দোকান ছিল এবং তিনিই তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ছিলেন। ৬ বছর, ২ বছর ও ৬ মাসের তিন সন্তান রয়েছে তাঁর । দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, তাঁর এক নিকট আত্মীয়, জানান, চেতন সিং তাদের বি ২ কোচে ঢুকে সাইফুল্লাহর নাম জিজ্ঞাসা করেছিল। “সাইফুল্লাহ তাকে তাঁর নাম বলার সঙ্গে সঙ্গে, আরপিএফ কনস্টেবল তাকে টার্গেট করেন”। সাইফুল্লাহকে প্যান্ট্রি কারে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে গুলি করা হয় বলে জানা গেছে।

দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সঙ্গে কথা বলার সময়, বিহারের অভিবাসী শ্রমিকদের সাহায্যকারী সংস্থা রিলায়েবল ফাউন্ডেশনের সভাপতি মহম্মদ আসিফ শেখ বলেছেন “আব্বাস আলীর পরিবারে তার স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তান রয়েছেন। চাকরির খোঁজে তিনি মুম্বই যাচ্ছিলেন। তার পাঁচ সন্তানের মধ্যে চারটি মেয়ে। তারা এখন বাঁচবে কী করে? পরিবারটি রেলের তরফে ১০ লক্ষ টাকা আর্থিক ক্ষতিপূরণ পেয়েছে। পরিবারের আয়ের আর কোন উৎস নেই। এই সামান্য টাকায় কতদিন চলবে”। তিনি আর ও বলেন, “যে ব্যক্তি গুলি চালিয়েছিল সে একজন RPF আধিকারিক, একজন সরকারি কর্মচারী। তাই পরিবারের দাবি কেন্দ্রীয় সরকারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। সেই সঙ্গে স্ত্রী’র চাকরিরও দাবি জানানো হয়েছে’।

RPF constable
Advertisment