এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) বৃহস্পতিবার কেরালা থেকে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার (পিএফআই) অন্যতম সদস্য শফিককে লখনউয়ের একটি আদালতে পেশ করে। ইডি তার চার্জশিটে জানিয়েছে যে গত এক বছরে পিএফআই-এর একাধিক অ্যাকাউন্টে প্রায় ১২০ কোটি টাকারও বেশি জমা পড়েছে। এই টাকার বেশির ভাগই নগদে জমা হয়েছে।
ইডি আরও জানিয়েছে, এই টাকা দিয়েই একাধিক অবৈধ প্রশিক্ষণ শিবির চালাত পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া। সেখানে চলত দেশবিরোধী বিভিন্ন কাজকর্ম। এমনকী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করারও পরিকল্পনা ছিল সংগঠনের। এর পাশাপাশি মোদী সহ একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রীকেও টার্গেট করা হয়েছিল বলে জানিয়েছে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)।
ইডি আরও অভিযোগ করেছে যে পিএফআই বিদেশ থেকে এই টাকা সংগ্রহ করেছে এবং সেই টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে ভারতে পাঠানো হত। ইডি তার চার্জশিটে জানিয়েছে বিদেশ থেকেও সংগঠনের অ্যাকাউন্ট গুলিতে বিপুল পরিমাণে টাকা জমা করা হয়েছিল। যা শুধুমাত্র ২০২০ সালের দিল্লির দাঙ্গায় ব্যবহার করা হয়নি বরং অস্ত্র ও বিস্ফোরক কিনতে কাজে লাগানো হয়েছিল।
ইডি জানিয়েছে, বিদেশ থেকে যে টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে আসত তা তাদের থেকে গোপন করা হয়। সেক্ষেত্রে বেআইনি ভাবে আর্থিক লেনদেনের একটি অভিযোগ আনা হয়েছে ইডির তরফে। ইডি সূত্রে খবর ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন অ্যাক্ট (FCRA) এর আওতায় এভাবে বিদেশ থেকে বিপুল টাকা আসা আইনত অবৈধ।
আরও পড়ুন : < কংগ্রেস প্রধানের দৌড়ে অশোক গেহলট, মুখ্যমন্ত্রী বাছাইয়ে আজই দলের জরুরি বৈঠক! >
একইসঙ্গে এনআইএ বলেছে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই) কর্মী-সদস্যরা সমাজের পিছিয়ে পড়া যুবকদের লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি), ইসলামিক স্টেট অফ ইরাক সহ একাধিক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনে যোগ দিতে উৎসাহিত করত।
ভারত জুড়ে অভিযান চালিয়ে NIA ১০৬ জন পিএফআই নেতা, ক্যাডার সহ অন্যান্যদের গ্রেফতার করেছে। NIA কেরালা, তামিলনাড়ু, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, দিল্লি, আসাম, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গোয়া, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার এবং মণিপুর সহ ১৫টি রাজ্যে একযোগে তদন্ত চালাচ্ছে। NIA এর আগে ৯৩টি জায়গায় তল্লাশি চালায়। কলকাতার পার্ক সার্কাসে ‘জঙ্গিনেতা’র বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় NIA-ED ও পুলিশ। ভোররাতে এই তল্লাশি অভিযান চালায় যৌথ তদন্তকারী সংস্থা। এদিন ভোর প্রায় ৪ টে নাগাদ ‘জঙ্গি নেতা’ শেখ মোক্তারের বাড়িতে হানা দেয় NIA এবং ED। সঙ্গে ছিল পুলিশও। চর্তুদিক থেকে ঘিরে ফেলা হয় বাড়ি।
এনআইএ এবং ইডি-র অভিযানে পিএফআই একটি বিবৃতি জারি করে বলেছে যে “পিএফআই-এর জাতীয়, রাজ্য এবং স্থানীয় নেতাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। রাজ্য কমিটির অফিসেও অভিযান চালানো হয়েছে। আমাদের কণ্ঠ রোধ করার জন্য এজেন্সিকে ব্যবহার করা হচ্ছে”।