অন্ধকার করিডোর, অপেক্ষারত রোগী, জানালা দিয়ে আসা সূর্যের আলোতেই চলছে চিকিৎসা। রাতের অন্ধকারে টর্চের আলোতে চলে রোগীর চিকিৎসা। তার মাঝেই সাপের উপদ্রব। প্রাণ হাতে করেই চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হয় চিকিৎসকদের। ৩হাজার স্কোয়ারফুটের ৬কোটি টাকা ব্যায়ে তৈরি ‘উন্নত’মানের বিলগাঁওয়ের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বেহাল হাল দেখে ভিরমি খাবেন যে কেউই।
দরিদ্র এবং পিছিয়ে পড়া মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য গড়ে তোলা হয় ১১টি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র। প্রতিটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৩হাজার স্কোয়ারফুট এলাকা জুড়ে। গড় খরচ ৬ কোটি টাকা। মেডিকেল অফিসার ডাঃ রবীন্দ্র পাওয়ার বলেন, টর্চের আলোই এখন ভরসা। ১১টি গ্রামের প্রায় ১২ হাজার মানুষের ভরসা এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। উদ্বোধনের মাত্র ১ বছরের মাথায় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির বেহাল হাল প্রশ্নের মুখে ফেলেছে দেশের চিকিৎসা পরিকাঠামোকে।
২০১০ সালে বিলগাঁওয়ে ২৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে ওঠে। পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ছয়টি কোয়ার্টার এবং মেডিকেল অফিসারদের জন্য দুটি কোয়ার্টার সহ ঢেলে সাজানো হয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস যখন কেন্দ্রটি ঘুরে দেখে তখন দেখা যায় অন্ধকার করিডোরে অপেক্ষারত রোগীরা এবং খোলা জানালা দিয়ে আসা সূর্যের আলোর সাহায্যে রোগীদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসকরা। ডা: পাওয়ার আরও বলেন, সোলার প্যানেল বসানো হলেও বর্ষাকালে সেগুলি কাজ করে না। অন্ধকারে টর্চের আলো জ্বেলে পরিষেবা দিতে হয়।
বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই স্বাস্থ্যদফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। এমনই হাল যে ভ্যাকসিন নষ্টের ভয়ে পাঠাতে হয় অন্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। পাওয়ারের কথায়, “যেখানে বিদ্যুৎ আছে, এমন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ভ্যাকসিন স্থানান্তর করা ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই। এমনও হয় দিনে ১২ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকেনা”।
নতুন পিএইচসি-র শোচনীয় অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে, জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ গোবিন্দ চৌধুরী বলেন বিদ্যুতঘাটতি মোকাবেলায় সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে “পিএইচসিগুলি প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত। আমরা দ্রুত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি,”। ধাদগাঁওয়ের আশেপাশের বেশিরভাগ নতুন পিএইচসি-তেও নেই কোন সুযোগ-সুবিধা। রয়েছে জলের অভাব। নেই ইন্টারনেটপরিষেবা। পুরো অঞ্চলজুড়েই প্রাথিমক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেহাল হাল।