'কাশ্মীর ফাইলস' সিনেমা নিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ ও বিজেপির লাগাতার প্রচারের মধ্যে রবিবার মুখ খুললেন সরসংঘচালক মোহন ভাগবত। আরএসএস প্রধান জানিয়েছেন, নয়ের দশকে যে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ঘরছাড়া হয়েছিলেন, তাঁদের আর ভয় নেই। এবার তাঁরা যখন কাশ্মীরে ফিরবেন, কেউ আর তাঁদের বাস্তুচ্যুত করবে না। অর্থপূর্ণভাবে ভাগবত বলেন, 'আমার মনে হয় দিনটা খুব কাছে চলে এসেছে। যখন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ঘরে ফিরে যাবেন, আমি আশা করব সেই দিনটা খুব শিগগিরিই আসবে।' রবিবার নভরেহ উদযাপনের শেষ দিনে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ভিডিওবার্তায় সম্বোধিত করছিলেন ভাগবত। সেই সময় তিনি একথা বলেন।
ভাগবত জানান, নিরাপত্তা এবং জীবিকার নিশ্চয়তা নিয়েই কাশ্মীরি পণ্ডিতরা ফিরে যাবেন। ভাগবত বলেন, 'কাশ্মীরি পণ্ডিত সম্প্রদায়ের একটা সংকল্প করা উচিত যে আমরা উগ্রপন্থার জন্য কাশ্মীর ছেড়েছিলাম। কিন্তু, যখন হিন্দু ও দেশভক্ত হিসেবে ফিরব, তখন নিরাপত্তা এবং জীবন-জীবিকার আশ্বাস নিয়ে ফিরব। আমরা এমনভাবে বাঁচব যাতে কেউ বাস্তুচ্যুত করার ভয় দেখাতে না-পারে। কাশ্মীরি পণ্ডিতরা গত চার দশক ধরে নিজেদের দেশেই বাস্তুচ্যুত হওয়ার যন্ত্রণা সহ্য করছেন। তাঁরা যাতে পরাজয় মেনে না-নেন আর প্রতিকূলতার মুখোমুখি হতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন।'
ভাগবত জানান, এর আগেই তিনি বলেছিলেন যে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরে ফেরার পথে মূল বাধাগুলোর একটি হল সচেতনতার অভাব। অন্যটি হল সংবিধানের ৩৭০ ধারা। ২০১১ সালের পর গত ১১ বছরে সম্মিলিত চেষ্টায় ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি ঘটেছে। আর, এবার কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ঘরে ফেরানোর জন্য সচেতনতা তৈরির কাজ চলছে। যা আরও সহজ করে দিয়েছে 'দি কাশ্মীর ফাইলস'।
আরএসএস তথা গোটা সংঘ পরিবার মনে করে, বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত 'দি কাশ্মীর ফাইলস' কাশ্মীরের অপ্রকাশিত সত্য ঘটনা তুলে ধরেছে। নয়ের দশকে কীভাবে কাশ্মীরি পণ্ডিতরা উপত্যকা থেকে ঘরছাড়া হয়েছিলেন, সেই কাহিনি আলোয় এনেছে এই সিনেমা। যে ফাইল দিনের পর দিন চাপা পড়ে ছিল, তা-ই সেলুলয়েডের পরদার মাধ্যমে প্রকাশ করে দিয়েছে এই সিনেমা।
যদিও বিরোধীদের অভিযোগ, 'দি কাশ্মীর ফাইলস'-এ যা দেখানো হয়েছে, সবটাই সংঘ পরিবারের দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা। এই সিনেমা ব্যবসা ছাড়া আর কিছুই করেনি। কারণ, কাশ্মীর থেকে পণ্ডিতদের ঘরছাড়া হওয়ার সময় কেন্দ্রে ছিল বিজেপির সমর্থিত সরকার। আর, কাশ্মীরের রাজ্যপাল ছিলেন আরএসএসের কাছের লোক জগমোহন। যিনি পরবর্তী সময়ে বাজপেয়ী মন্ত্রিসভার সদস্যও হয়েছিলেন। তবে, সেসব সমালোচনা গায়ে মাখতে নারাজ পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রী। তিনি সংঘ পরিবার এবং কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষস্তরের সকলের সঙ্গেই স্ত্রী তথা ছবির অভিনেত্রী পল্লবী জোশিকে নিয়ে দেখা করেছেন। ইতিমধ্যে তাঁর 'দি কাশ্মীর ফাইলস' ৩০০ কোটি টাকার ব্যবসাও করেছে।
Read story in English