দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এল বড়সড় বদল। বুধবারই নতুন শিক্ষানীতিতে স্বীকৃতি দিয়ে নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি (এনইপি) আনল কেন্দ্র। তবে পিছু ছাড়ল না বিতর্ক। মোদী সরকারের এই নয়া শিক্ষানীতির নেপথ্যে অনেকটাই উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস), এমন তথ্য উঠে এল। তেমনই বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন ভারতে ক্যাম্পাস খুলতে অনুমতি দিচ্ছে কেন্দ্র সরকার তা নিয়েও সোচ্চার হয়েছে আরএসএস-এর একাধিক শাখা।
জানা গিয়েছে, এই শিক্ষানীতির খসড়া তৈরির সময় আরএসএস-এর বেশ কয়েকটি সহযোগী সংস্থা জড়িত ছিল। আরএসএসের কর্মীরা, বিজেপি শাসিত কয়েকটি রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী, সরকারের প্রতিনিধি এবং এনইপি খসড়া কমিটির চেয়ারম্যান কে কস্তুরিরঙ্গনের মধ্যে বৈঠক হয়েছিল। যদিও বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার তরফে যে নীতি অনুমোদন হয়েছে সেখানে রাজনৈতিক দৃঢ়তা ছিল অনেক বেশি এমনটাই মত ওয়াকিবহাল মহলের। এমনকী কেন্দ্রীয় মানব সম্পদ নাম বদলে শিক্ষা মন্ত্রক করার নেপথ্যে আরএসএস-এর অনুমোদন রয়েছে বলেই রাজনৈতিক সূত্রের খবর।
আরও পড়ুন, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি: এম ফিল বাতিল, বিদেশী কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্যাম্পাস গড়ার অনুমতি মোদী সরকারের
তবে এই নীতিতে উল্লেখযোগ্যভাবে হিন্দি ভাষা 'আরোপে' কম গুরত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশে দ্বিতীয়বারের জন্য বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর সব রাজ্যে হিন্দি ভাষাকে শিক্ষাক্ষেত্রে আবশ্যক হিসেবে ঘোষণা করে তারা। এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ একাধিক রাজ্যও। নয়া জাতীয় শিক্ষানীতিতে সেই সুর নরম করা হয়েছে। সাফ জানান হয়েছে, কোনও রাজ্যের উপর জোর করে কোনও ভাষা আরোপ করা হবে না। নয়া নীতিতে বলা হয়েছে, পড়ুয়ারা তাঁদের পছন্দ মতো ভাষা বেছে নিতে পারবেন। তবে প্রথম তিনটি ভাষার মধ্যে দুটি ভাষা দেশীয় হতে হবে।
এদিকে, বুধবারই জানিয়ে দেওয়া হয় যে ১০০টি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে তাদের ক্যাম্পাস খুলতে চলেছে। এই প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর বিরোধিতা করে আরএসএস। যদিও আরএসএস কথায় কর্ণপাত না করেই নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন শিক্ষানীতি বদলের কর্তারা। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আরএসএস এক শাখা প্রধান বালমুকুন্দ পান্ডে বলেন, "আমি যা যা পরামর্শ দিয়েছি তার ৮০ শতাংশ মেনে নেওয়া হয়েছে। আমি এখনই বলতে চাইছি না কোন কোন সিদ্ধান্ত মানা হয়নি।"
তবে নয়া শিক্ষানীতি নিয়ে খুশি অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘের সংগঠন মন্ত্রী মহেন্দ্র কাপুর। তিনি বলেন, "আমাদের অনেক পরামর্শ মেনে নেওয়া হয়েছে। যখন সম্পূর্ণ এনইপি তথ্য প্রকাশ হবে তখনই বুঝতে পারা যাবে কোন পরামর্শ নেওয়া হয়নি।" অন্যদিকে, হিন্দি ভাষার গুরুত্ব কমিয়ে দেওয়ার নেপথ্যে আরএসএস-এরই সম্মতি ছিল এমনটাই জানান হয়েছে।
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন