শুক্রবার সকালে আরও পড়ল টাকার দাম। এ দিন মার্কিন ডলারের তুলনায় ৫৫ পয়সা পড়ে ভারতীয় টাকার দাম হল ৭৪ টাকা ১৩ পয়সা। অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা আশা করেছিলেন এই পরিস্থিতিতে আরবিআই সুদের হার বাড়াবে। কিন্তু শুক্রবার প্রকাশিত হওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের আর্থিক বিবৃতিতে দেখা গেল তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এতদিন একদিকে একটানা দেশ জুড়ে বাড়ছিল পেট্রোল-ডিজেলের দাম, অন্যদিকে মার্কিন ডলার পিছু কমছিল ভারতীয় টাকার দাম। বৃহস্পতিবার দুপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, লিটার পিছু ২.৫০ টাকা কমানো হয়েছে তেলের দাম। লিটার পিছু ১.৫০ টাকা আবগারি শুল্ক কমিয়েছে কেন্দ্র। বাকি ১ টাকা কমিয়েছে তেল পরিশোধনকারী সংস্থাগুলি।
টাকার দাম পড়া নিয়ে কেন্দ্রকে ব্যঙ্গ করে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী এ দিন টুইট করে বলেন, টাকার দাম পড়ার খবর আর ‘ব্রেকিং’ নয়, ‘ব্রোকেন’।
#Breaking: Rupee slips to 73.77
It's not breaking - it's Broken.#Rupee
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi)
#Breaking: Rupee slips to 73.77
It's not breaking - it's Broken.#Rupee— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) October 4, 2018
4, 2018
সপ্তাহের শুরুতেই সারা দেশে রান্নার গ্যাসের দাম এক লাফে অনেকটা বেড়েছে। পাশাপাশি, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর টাকার এতটা দাম পড়ার নজির নেই। ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলাররাও বলছেন, মার্কিন ডলারের চাহিদা এমনিতেই বাড়ছে। বিদেশ থেকে মার্কিন ডলারের বিনিময়ে তেল কিনতে হয় বিভিন্ন সংস্থাকে। এছাড়া চিনের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক খারাপ হওয়ার ফলে তারও ছাপ পড়ছে আন্তর্জাতিক বাজারে।
আরও পড়ুন,RBI Monetary Policy Review; What to Expect: আরবিআই-এর আর্থিক নীতি; কী কী প্রত্যাশা
দেশের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, টাকার দাম কমার ফলস্বরূপ আরবিআই বাড়াতে পারে ঋণের ওপর সুদের হার। গত সপ্তাহেই রেপো রেট (যে হারে দেশের বাকি ব্যাঙ্কগুলোকে ঋণ দেয় আরবিআই) ২৫ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক। বর্তমানে রেপো রেটের পরিমাণ ৬.৫০। এই সপ্তাহেও টাকার দাম ক্রমশ কমতে থাকায় খুব শিগগির বেসিস পয়েন্ট বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে আরবিআই এর। কিন্তু সে সব কিছুই হয়নি। শুক্রবারের আর্থিক বিবৃতে আরবিআই জানিয়েছে, যাবতীয় সুদের হার আপাতত অপরিবর্তিতই থাকছে।
অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেছেন, টাকার দাম পড়ার পেছনে সবটাই ‘বাহ্যিক কারণ’। আন্তর্জাতিক সংকটকেও দায়ী করেছেন তিনি। আশ্বাস দিয়েছেন, দেশের আভ্যন্তরীণ অর্থনীতি মজবুত রয়েছে। তবে শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা প্রমাদ গুনছেন অন্যখানে। তাঁরা বলছেন, মার্কিন মুদ্রার পাশাপাশি যদি প্রতিদ্বন্দ্বী অর্থনীতির চাহিদা বাড়ত, সেক্ষেত্রে টাকার দাম আরও পড়লেও চিন্তার তেমন কারণ ছিল না। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। মার্কিন ডলারের চাহিদাই কেবল চড়চড় করে বাড়ছে।