Advertisment

কৃষিবহির্ভূত গ্রামীণ ক্ষেত্রে চাকরির সঙ্কট, কমছে দৈনিক মজুরি

সব মিলিয়ে যে ছবিটা পরিস্ফুট হচ্ছে, তাতে আগামি মাসের লোকসভা ভোটের আগে গ্রামীণ সঙ্কট গভীরতর হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, যা স্রেফ কৃষিক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

গত বছরের তুলনায় গ্রামীণ ক্ষেত্রে ডিসেম্বর মাসে বেতন বেড়েছে ৩.৮ শতাংশ, যা কিনা এই মাসটির নিরিখে সর্বনিম্ন। অন্যদিকে কমছে কৃষি পণ্যের দাম। ডিসেম্বরে বার্ষিক পাইকারি মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল "খাদ্য" পণ্যের জন্য মাইনাস ০.০৭ শতাংশ, এবং "খাদ্য বহির্ভূত" পণ্যের জন্য ৪.৪৫ শতাংশ। সব মিলিয়ে যে ছবিটা পরিস্ফুট হচ্ছে, তাতে আগামি মাসের লোকসভা ভোটের আগে গ্রামীণ সঙ্কট গভীরতর হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, যা স্রেফ কৃষিক্ষেত্রে সীমাবদ্ধ নয়।

Advertisment

গ্রামীণ ক্ষেত্রে দৈনিক মজুরির জাতীয় হার ২০১৮-র ডিসেম্বরে ছিল ৩২২.৬২ টাকা, যা গত বছরের ডিসেম্বরের ৩১০.৬৯-এর তুলনায় ৩.৮৪ শতাংশ বেশি। ২৫ টি কৃষি সংক্রান্ত এবং অ-কৃষি পেশার সাধারণ গড় থেকে এই হিসেবের প্রাপ্তি। জাতীয় বার্ষিক গ্রামীণ ভোগ্যপণ্যের মূল্য সূচকে ১.৫ মুদ্রাস্ফীতির হার মাথায় রাখলে মজুরির 'বাস্তব' বৃদ্ধির হার ২.৩ শতাংশের সামান্য বেশি।

এনডিএ সরকারের আমলে ২০১৪-১৮-র সময়কালে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৪.৭ শতাংশ, মুদ্রাস্ফীতির হার মাথায় রাখলে ৪.২ শতাংশ। তুলনায়, ইউপিএ সরকারের আমলে (২০০৯-১৩) এই বৃদ্ধির হার ছিল ১৭.৮ শতাংশ, সমসময়ে মুদ্রাস্ফীতির হার হিসেবে রাখলে 'বাস্তব' বৃদ্ধির বার্ষিক হার ছিল ৬.৭ শতাংশের বেশি।

সুতরাং, সোজা কথায়, গত পাঁচ বছরে গ্রামীণ দৈনিক মজুরি কমেছে।

আরও পড়ুন: শ্রমিকদের পেনশন এবং আধার

লক্ষনীয়, গত পাঁচ বছরে এই হ্রাসমান মজুরি যে সার্বিকভাবে শুধু কৃষি-সংক্রান্ত কাজেই সীমাবদ্ধ ছিল, এমন নয়। 'লেবার ব্যুরো'-র পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, আটটি মূল কৃষিকাজে (ফসলের জমি তৈরি, ফসল বোনা, ফসলের পরিচর্যা, ফসল তোলা, 'হর্টিকালচার' সংক্রান্ত কাজ, পশুপালন, সাধারণ সেচকার্য এবং বন সংরক্ষণ) ডিসেম্বরে বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধির হার ছিল ৫.১৪ শতাংশ, যা সাধারণ গ্রামীণ মজুরির হারের (৪.৬৮) থেকে বেশি। ফল, কৃষকরা উপযুক্ত দাম পান নি তাঁদের উৎপাদিত পণ্যের, দাম বেড়েছে খুবই অল্প। এবং একই সঙ্গে কৃষিকাজে মজুরির হার সেই অনুপাতে কমেনি।দু'দিক থেকেই সাঁড়াশি চাপে পড়েছেন কৃষকরা।

অন্যদিকে, নিৰ্দিষ্ট দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের (স্কিল্ড ওয়ার্কার্স) ক্ষেত্রেও (ছুতোর, মিস্ত্রি, নির্মাণকর্মী, ড্রাইভার, ইলেক্ট্রিশিয়ান ইত্যাদি) সার্বিক গ্রামীণ মজুরির হারের তুলনায় গত পাঁচ বছরের মধ্যে শেষ তিন বছরে পিছিয়েই রয়েছে। নির্মাণক্ষেত্রে (রাস্তা বা বাঁধ তৈরি, কুয়ো খনন, শিল্প প্রকল্প ইত্যাদি) উল্লেখযোগ্য ভাবে কমেছে মজুরির হার (৪.৩৮ শতাংশ)।কৃষিক্ষেত্র বহিৰ্ভূত শ্রমজীবীদের (যেমন কুলি, বা মালপত্র পরিবহনে তোলার কাজে যাঁরা নিযুক্ত) ক্ষেত্রে এই হার আরও কম, ৪.৩২ শতাংশ।

মোদ্দা কথা, গ্রামীণ ভারতের সঙ্কট শুধু কৃষিজাত আয়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। গত ৩ মার্চ 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস' একটি প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, গত বছরের শেষ তিন মাসে এই আয়ের হার ছিল গত ১৪ বছরের মধ্যে নিম্নতম। সঙ্কট শুধু কৃষিজমিতে নয়, তার বাইরেও। এবং আসন্ন নির্বাচনের প্রাক্কালে এটা অশনি সংকেতই।

NDA
Advertisment