চলতি সপ্তাহেই ভারতে আসতে পারেন রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। ইউক্রেনের উপর আগ্রাসনের জেরে পশ্চিমী দেশগুলি মস্কোকে কার্যত এক ঘরে করে দিয়েছে। পশ্চিমের বিভিন্ন দেশ রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই কূটনৈতিক প্রেক্ষাপটে লাভরভের দিল্লি সফর তাই ভূ-রাজনীতিতে তাৎপর্যবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে। দেখার যে, লাভরভের দিল্লি সফর আমেরিকা সহ পাশ্চাত্য দেশগুলি কোন চোখে দেখছে। এ সপ্তাহেই ভারতে আসবেন চিনা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। তারপরই আসবেন বর্তমানে বেজিংয়ের বন্ধু রাষ্ট্র রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী লাভরভ।
ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার জেরে কার্যত দুই শিবির গড়ে উঠেছে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা জোরদার হয়েছিল। যদিও ভারত দুই শিবির থেকেই সমদূরত্বের নীতি বা জোট নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। আগেই বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছিল যে, দুই দেশের সঙ্গেই ভারতের স্বার্থ জড়িত রয়েছে।
রুশ আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে দিল্লির কূটনৈতিকস্তরে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে সাম্প্রতিক কালে রাষ্ট্রপুঞ্জে ইউক্রেন-রাশিয়া রেজোলিউশনে ভোটাভুটিতে বিরত থেকেছিল ভারত। যুদ্ধের এক মাস পূর্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গত বৃহস্পতিবার, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ইউক্রেনের মানবিক সঙ্কট নিয়ে রাশিয়ার আনা প্রস্তাবের ভোটাভুটি থেকে বিরত থাকে দিল্লি। ওই প্রস্তাব ইউক্রেনের প্রতি সমালোচনামূলক বলে মনে করা হয়েছিল। প্রস্তাবটি প্রয়োজনীয় ভোট না পাওয়ায় খারিজ হয়ে যায়। বিরত থাকার মাধ্যমে নয়াদিল্লি ইঙ্গিত দেওয়া চেষ্টা করেছে যে, মস্কোর অবস্থানের সঙ্গে ভারত সহমত নয়।
এর আগে ভারত ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার সামরিক পদক্ষেপের সমালোচনা করে পশ্চিনী দেশগুলির আনা নিরাপতাতা পরিষদের একাধিক প্রস্তাবের ভোটাভুটিতে বিরত ছিল। বৃহস্পতিবারের বিরত থাকা নয়া দিল্লির একটি নিরপেক্ষ অবস্থান বজায়ের প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে কোয়াড দেশগুলির মধ্যে, ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের বিরোধিতার ক্ষেত্রে ভারত "কিছুটা নড়বড়ে" ছিল। কোয়াডের বাকি সদস্য দেশ অস্ট্রেলিয়া এবং জাপান রাশিয়ার আগ্রাসনের সমালোচনা করেছে।
শুরু থেকেই যুদ্ধ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে মস্কো এবং কিয়েভের মধ্যে সরাসরি আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে ভারত। সংসদে কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছিলেন, 'পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছি এবং অবিলম্বে হিংসা বন্ধ করার জন্য ও সমস্ত শত্রুতা বন্ধ করার রাশিয়া ও ইউক্রেনের কাছে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছি।'
Read in English