রুশ-ভারত সম্পর্ক কী আরও গাঢ় হচ্ছে? এক সপ্তাহের মধ্যে পুতিনের মুখে দু'বার ভারতীয়দের প্রশংসায় এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। এবার ভারতীয়দের 'খুবই প্রতিভাবান' ও 'কাজের' বলে প্রশংসায় পঞ্চমুখ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট। তিনি মনে করেন, দেশবাসীর প্রবল প্রতিভার জেরেই আজ বিশ্বদরবারে অন্যতম সমৃদ্ধশালী দেশ ভারত।
শুক্রবার জাতীয় ঐক্য দিবসে রাশিয়ান হিস্টোরিক্যাল সোসাইটির দশম বার্ষিকীতে এক সভায় বক্তৃতা দিতে গিয়ে ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, 'আসুন ভারতের দিকে তাকাই। সেখানকার মানুষ খুব প্রতিভাবান, কাজের। দেশবাসীর গুণাবলির জেরেই ভারতের অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন বেড়েছে। যা অবশ্যই প্রশংসনীয়।'
আগামী ৭ এবং ৮ নভেম্বর বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্করের মস্কো সফরের ঠিক আগে পুতিনের ভারতীয়দের সমন্ধে প্রশংসনীয় মন্তব্য বিশ্ব রাজনীতির প্রেক্ষিতে তাৎপর্যবাহী।
এ দিনের বক্তব্যে পুতিন ঔপনিবেশিকতাবাদ, রাশিয়ার সভ্যতা ও সংস্কৃতি নিয়েও কথা বলেছেন।
গত সপ্তাহে, পুতিন ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার বিশেষ সম্পর্কের কথা বলেছিলেন। তাঁর মুখে শোনা যায়, 'ভারতের সঙ্গে আমাদের বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে যা কয়েক দশক ধরে সত্যিই ঘনিষ্ঠ মিত্র সম্পর্কের ভিত্তির উপর নির্মিত। ভারতের সঙ্গে আমাদের কখনই তেমন সমস্যা ছিল না, আমরা সবসময় একে অপরকে সমর্থন করেছি এবং এটা ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আমি আশাবাদী।'
'স্বাধীন বিদেশ নীতি' অনুসরণ করার জন্য রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও প্রশংসা করেছেন। ঠান্ডা লড়াইয়ের সময় থেকেই জোট নিরপেক্ষ স্বাধীন বিদেশ নীতি ভারতের পররাষ্ট্রনীতির অন্যতম ভিত্তি।
ইউক্রেনে আগ্রাসনের কারণে পশ্চিমী বিশ্ব যখন রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, তখন ভারত জোট নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রেখে গত কয়েক মাসে সে দেশ থেকে বিশেষ ছাড়ে অশোধিত তেল আমদানি বাড়িয়েছে।
ভারত এখনও ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা করেনি এবং কূটনীতি ও আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই সংকটের সমাধান করতে হবে বলে শুরু থেকেই বলে এসেছে। কিন্তু ১৬ সেপ্টেম্বর উজবেকিস্তানের সমরকন্দে পুতিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ছিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর। সেই সময় পুতিনকে মোদি স্মরণ করিয়ে বলেছিলেন যে, 'আজকের যুগ যুদ্ধের নয়।'