Indo-Russia Relationship: আফগানিস্তান সঙ্কট এবং চিনা আগ্রাসনের আবহে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক ইন্দো-রাশিয়ার। সোমবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বৈঠকের মূল অ্যাজেন্ডা—সন্ত্রাসবাদ এবং সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াই। এমনটাই প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর। বৈঠক শুরুর আগে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘বিশ্ব উন্নয়নে যেকোনও ইস্যুতে কাজ করবে ইন্দো-রাশিয়া। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের দু’জনের অবস্থান প্রায় একরকম। আমাদের মাদক চক্র এবং সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধেও লড়তে হয়।‘ আফগানিস্তানে তৈরি হওয়া সাম্প্রতিক সঙ্কট দুই দেশের কাছে উদ্বেগের কারণ। এদিন জানান রুশ প্রেসিডেন্ট।
পাশাপাশি ভারতকে মিত্র রাষ্ট্র, সময়োপযোগী বন্ধু হিসেবেও এদিন ঘোষণা করেন পুতিন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘কোভিড বিশ্বব্যাপী একাধিক প্রতিকূলতা তৈরি করলেও ইন্দো-রুশ সম্পর্কে কোনও প্রভাব পড়েনি। আমাদের বিশেষ কৌশলগত সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে।‘
এদিকে, সম্প্রতি ভারতীয় নৌ সেনার সদস্য হল আইএনএস বিশাখাপত্তনম। সেই অনুষ্ঠানের উপস্থিত হয়ে নাম না করে চিনকে তীব্র আক্রমণ করলেন রাজনাথ সিং। প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর নিশানার মুখে চিনের সাম্প্রতিক সামুদ্রিক আইন। রাজনাথের কটাক্ষ, ‘কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন রাষ্ট্র সঙ্কীর্ণ স্বার্থে ক্রমাগত রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমুদ্র নীতি লঙ্ঘন করে চলেছে। এটা অত্যন্ত উদ্বেগের। কিছু রাষ্ট্র নিজদের মতো করে সমুদ্র নীতির সংজ্ঞা বদলে রাষ্ট্র নীতির জলনীতিকে দুর্বল করে চলেছে।‘
জানা গিয়েছে, বেজিংয়ের নতুন সমুদ্র নীতিতে বলা, চিনের নিয়ন্ত্রণে থাকা জলভাগে বিদেশী নৌ বহরের প্রবেশ নজরদারির মধ্যে থাকবে। প্রয়োজনে সেই নৌ বহরকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে বেজিং। সামরিক এবং বানিজ্যিক—দুই ধরনের নৌ বহরের প্রবেশেই এই নীতি কার্যকর। এখানেই আপত্তি নয়া দিল্লির। তাদের দাবি, ‘রাষ্ট্রসঙ্ঘের জল নীতিতে বলা, ‘উপকূলবর্তী কোনও রাষ্ট্র, বিদেশী নৌ বহরকে নিয়ন্ত্রিত করতে পারবে না। যতক্ষণ সেই বিদেশী নৌ বহর সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়।‘ সেই প্রসঙ্গ তুলেই এদিন সরব হয়েছিলেন রাজনাথ সিং।
পাশাপাশি, পেন্টাগন সম্প্রতি ইউএস কংগ্রেসকে চিনা দখলদারি এবং আগ্রাসন নিয়ে রিপোর্ট পাঠিয়েছে। সেই রিপোর্টে এলএসি অর্থাৎ ইন্দো-চিন সীমান্ত বরাবর বেজিংয়ের দখলদারির প্রসঙ্গ উল্লেখ আছে। পেন্টাগনের তৈরি রিপোর্টে উল্লেখ, ‘এলএসি বরাবর ধীরে ধীরে কৌশল অবলম্বন করে দাবি চাপানোর চেষ্টা করছে চিন।‘ সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতরের এই রিপোর্টের সমালোচনায় ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। সাপ্তাহিক প্রেস বিবৃতিতে মুখপাত্র অরিন্দম বাগচি বলেন, ‘ভারত, তাদের ভূখণ্ডে চিনের অবৈধ দখলদারি মানে না। তাই চিন এই দাবি করলে সেটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।‘ তাঁর মন্তব্য, ‘বহু বছর ধরে এলএসি বরাবর নির্মাণকাজ চালাচ্ছে বেজিং। কিন্তু ভারতীয় ভূখণ্ডে তাদের দখলদারি মানেই না দিল্লি।‘
পেন্টাগনের রিপোর্ট প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিদেশ মন্ত্রকের এই কর্তা বলেছেন, ‘আমাদের ভূখণ্ডে চিনা উপস্থিতির আপত্তি কুটনৈতিকভাবে বেজিংকে জানানো হয়েছে। আগামি দিনেও সেই ভাবে চিনকে অবগত করা হবে।‘ তাঁর দাবি, ‘এলএসি বরাবর ভারত নির্মাণকাজ শুরু করেছে। তৈরি হচ্ছে সেতু, সড়ক। এই পরিকাঠামো উন্নয়ন সম্পন্ন হলে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সীমান্তের নাগরিকদের যোগাযোগ আরও বাড়বে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন