রাশিয়া আর ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। যুদ্ধের চেয়েও বলা ভালো, রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে। আর ইউক্রেন প্রতিরোধ করছে। সেই হামলায় ইউক্রেনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সংবাদমাধ্যমের দৌলতে সেসব আমরা সবাই ইতিমধ্যে জেনে ফেলেছি। কিন্তু, এবার সেই যুদ্ধেই এক অদ্ভূত কৌশল দেখাল রাশিয়া। যেখানে সেনা পাঠিয়ে ব্যাপক গোলাগুলি করে নয়। স্রেফ প্রচার চালিয়েই আস্ত একটা শহর দখল করে নিল রাশিয়ার বাহিনী।
যে শহরে রুশ সেনা এই কাণ্ড করেছে, তার নাম লিসিচানস্ক। ইউক্রেনেরই একটা শহর। বেশিরভাগই শহর ছেড়ে পালিয়েছেন। রাশিয়ার হামলা শুরুর পরপরই। তবু বেশ কিছু মানুষ থেকে গিয়েছেন। ওই ঘরবাড়ি, দোকানপাট, জমি আর ফসলের মায়ায়। ঠিক কী প্রচার করেছে রাশিয়া? রুশ সেনাবাহিনী ইউক্রেনের রেডিও, টেলিভিশন আর ইন্টারনেট হ্যাক করে ওই শহরে লাগাতার প্রচার করা হয়েছে, রাশিয়া হামলা চালাচ্ছে না। ইউক্রেনের সেনাই গোটা বিশ্বের থেকে সহমর্মিতা আদায়ের জন্য নিজেদের লোকেদের হত্যা করছে। লাগাতার চলেছে এই প্রচার। আর, তার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় বাসিন্দাদের ওপর।
কতটা প্রভাব, একটা উদাহরণ দিলেই স্পষ্ট হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ম্যাক্সিম ক্যাটেরিনিন। লিসিচানস্কের এই বাসিন্দার বাড়িতে আছড়ে পড়েছে সেনাবাহিনীর গোলা। বাড়ির প্রাচীর থেকে এখনও বেরিয়ে আছে পুড়ে যাওয়া রকেটের অংশ। একদিন আগে এই গোলা আর রকেট আছড়ে পড়েছে ক্যাটেরিনিনের বাড়িতে। আর, তাতে ক্যাটেরিনিনের মা এবং সৎ বাবা মারা গেছেন।
আরও পড়ুন- হানি-ট্র্যাপে DRDO-র ল্যাব ইঞ্জিনিয়ার, ভারতের মিসাইল সংক্রন্ত গোপন তথ্য পাক গুপ্তচরের হাতে
ক্যাটেরিনিন কাঁদছেন না। বদলে রাগে আর প্রত্যাঘাত করতে না-পারার যন্ত্রণায় ছটফট করছেন। কিন্তু, তাঁর রাগ কার প্রতি জানেন? ইউক্রেনের সেনার ওপর। কারণ, টিভি থেকে ইন্টারনেট- সবকিছুর সাহায্যে ক্যাটেরিনিন জানতে পেরেছেন, হত্যাকারী কারা। রুশ সেনা না, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী। আর, ঘটনার একদিন পরও সেই কথা চিৎকার করে কখনও বিড়বিড় করে বলে চলেছেন লিসিচানস্কের ওই ইউক্রেনীয়।
প্রতিবেশী আর চেনা-পরিচিতরা সমবেদনা জানাতে এলে তাঁদেরকেও গোলার আঘাত এবং রকেটের চিহ্ন দেখাচ্ছেন। আর, অভিযোগ করছেন ইউক্রেনের সেনার বিরুদ্ধে। আর, সেই প্রতিবেশী এবং চেনা পরিচিতরাও সেই সব অভিযোগ বিশ্বাস করছেন। কারণ, তাঁরাও যে লিসিচানস্কের বাসিন্দা। ম্যাক্সিম ক্যাটেরিনিনের মত তাঁরাও যে বিশ্বাস করেন এসব আসলে ইউক্রেনের সেনারই কুকীর্তি।
Read full story in English