কেরালার শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশে বাধা দেওয়ার জন্য দুদিনে ২০০০-এর বেশি জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার পুলিশ এ কথা জানিয়েছে।
এর মধ্যে ৭০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে পাতানমতিত্তা জেলা থেকে। এই জেলাতেই মন্দির অবস্থিত। সংবাদমাধ্যমকে ডিজিপি লোকনাথ বেহরা জানিয়েছেন, এ ছাড়া তিরুবনন্তপুরম, কোজিকোড়, এর্নাকুলম এবং অন্যান্য জায়গাতেই অনেককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে মিলিত হন। সে বৈঠকে ব্যবস্থাগ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি। তারপরথেকেই শুরু হয় ধরপাকড়।
আরও পড়ুন, শবরীমালা রায় পুনর্বিবেচনার পরবর্তী শুনানি ১৩ নভেম্বর, জানিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
গত ২৮ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল যে শবরীমালা মন্দিরে সব বয়সের মহিলাদের প্রবেশাধিকার দেওয়া হল। সে নির্দেশ অমান্য করার জন্য ২৩০০ জনের বিরুদ্ধে মোট ৪৫২ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন, ধরপাকড় এখনও চলবে। লোকনাথ বেহরা বলেছেন, ’’নিয়ম মোতাবেক মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আসন্ন উৎসবের মরশুমে (যা ১৭ নভেম্বর শুরু হয়ে দু মাস ধরে চলবে), যাতে অক্টোবরের মত একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা দেখার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হবে।’’
জেল যাতে ভরে না যায়, সে কারণে ধৃত ১৫০০ জনকে জামিনে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকিদের বিভিন্ন জেলে পাঠানো হয়েছে।
শবরীমালা বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে, তা খতিয়ে দেখতে আগামী ২৯ অক্টোবর কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন পুলিশকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পর আয়াপ্পা মন্দির খুলেছিল গত ১৭ অক্টোবর। তার পর থেকে পুলিশ, সংবাদমাধ্যম এবং তীর্থযাত্রীদের ওপর হামলায় জড়িত অন্তত ২০০ জনের ছবি প্রকাশ করে পুলিশ। তারপরই বোঝা গিয়েছিল ধরপাকড় নিশ্চিত।
আরও পড়ুন, শবরীমালা ও রক্তে ভেজা স্যানিটারি ন্যাপকিন নিয়ে কী বললেন স্মৃতি ইরানি?
১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী মহিলাদের প্রবেশ চিরকুমার আয়াপ্পার মন্দিরে নিষিদ্ধ ছিল। সেই প্রথা ভেঙে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল সব বয়সের মহিলারাই মন্দিরে প্রবেশ করতে পারবেন।
গত ১৭ অক্টোবর বিকেল পাঁচটায় পাঁচদিনের মাসিক পূজার জন্য মন্দির খোলা হয়। বিক্ষোভকারীরা এই পাঁচদিনে প্রায় কোনও মহিলাকেই মন্দিরে প্রবেশ করতে দেননি।
কংগ্রেস নেতা রমেশ চেন্নিতালা শুক্রবার অভিযোগ করেছেন, বিজয়ন শবরীমালাকে যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে চাইছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ভক্তদের সঙ্গে সিপিএম ক্যাডারদের লড়িয়ে দিয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করতে চাইছেন।’’ একই সঙ্গে ওই কংগ্রেস নেতা বলেছেন, ট্রাঙাঙ্কোর দেভোস্বম বোর্ড সম্পূর্ণ ব্যর্থ এবং বোর্ড ভেঙে দেওয়া উচিত।
বেশ কিঠু বছর ধরে এই বোর্ড উৎসবের মরশুমে তীর্থযাত্রীদের সবধরনের সুবিধার ব্যাপারে দেখভালের জন্য লোক নিয়োগ করে থাকে।
গত সপ্তাহের ঘটনার পর থেকে তীর্থযাত্রীর সংখ্যা বিপুলমাত্রায় কমেছে, সেই সঙ্গে কমেছে আয়ও।